বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইউপিতে ভোট ডাকাতি হয়েছে : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা, পৌর, সিটি নির্বাচনের মতোই এবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও ভোট ডাকাতি হয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। গতকাল বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দ্বিতীয় দফা সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগে তিনি কমপক্ষে ৫০টি ইউপি নির্বাচনের ভোট বাতিল করে পুননির্বাচনের দাবি জানান। রিজভী আহমেদ বলেন, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সব কটি কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে তারা নিজেদের প্রার্থীর ব্যালটে সিল মেরেছে। ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ইকরি ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি। অবিলম্বে তার ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর, রাজনগর, কালীনগর, রসুনিয়া ও মধ্যপাড়া ইউনিয়নের সব কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে।

ভোট এখন প্রজেক্ট : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করতে প্রহসনের নির্বাচনী প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দলীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে এই নির্বাচনী নাটক শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক জায়গায় আগের রাতেই বাক্স ভরে রাখা হয়েছে। এই প্রহসনের নির্বাচনকে আজকাল অনেকে ‘দিস ইজ দ্য ইলেকশন প্রজেক্ট অব গভর্নমেন্ট’ আখ্যা দিচ্ছেন। গতকাল দুপুরে জিয়া পরিষদের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর এ অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

এ সময় জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবির মুরাদ, অধ্যাপক ইমতিয়াজ হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, শফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সহায়তায় এ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ও বিশ্ববাসীকে বোকা বানানোর অপচেষ্টা চলছে। শতাধিক ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন রেখে বলেন, অতীতে কখনো দেখেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীবিহীন ভোট হয়েছে। সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে আগের রাতেই সব ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয়েছে। এ প্রকল্পের নামে নির্বাচন দেখিয়ে তারা আসলে জনগণ ও বিশ্ববাসীকে বোকা বানাতে চায়। প্রহসন জেনেও আন্দোলনের অংশ হিসেবেই এর প্রতিবাদ জানাতে নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি। নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমাদের আর কোনো উপায় নেই। কারণ বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয় যে, অন্য কিছু করবে। তবে প্রহসনের এ নির্বাচনী নাটকের মাধ্যমে সরকারের মুখোশ পুরোপুরি উন্মোচিত হয়ে গেছে। এ ছাড়া বর্তমান মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে কখনোই কোনো নির্বাচন ‘সুষ্ঠু’ হবে না। তিনি বলেন, কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসনের ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করা হয়নি। বরং এর মাধ্যমে ‘ডেমোক্রেটিক সেন্ট্রালাইজেশন’ করা হয়েছে মাত্র। কারণ চেয়ারপারসন নিজে এ ক্ষমতা নেননি। কাউন্সিলই বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর