বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

খালাস চেয়ে রিভিউ করলেন নিজামী

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেছেন। গতকাল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন জানিয়েছেন, ৭০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে তারা ৪৬টি গ্রাউন্ড উল্লেখ করেছেন। এতে তার বাবার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রিভিউ আবেদনে আসামিপক্ষ দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর বাহিনীর সঙ্গে নিজামীর সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল না। নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নিজামীর বিরুদ্ধে যেসব অপরাধে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে তা করেছে পাকিস্তানি সেনারা। তার দায় নিজামীর ওপর পড়ে না। অপরাধ করেছে পাকিস্তানি সেনারা এবং ঘটনাচক্রে দেখানো হয়েছে নিজামী তাদের সঙ্গে ছিলেন। এ বিষয়টি আপিলের শুনানিতেও বলেছি। পাকিস্তান বাহিনী যখন অপারেশন করে তখন নিজামীর মতো ২১ বছরের এক যুবক তাদের সঙ্গে থেকে তাদের দিকনির্দেশনা দেবে এটা হাস্যকর ব্যাপার। আমরা মনে করি আপিল বিভাগ রিভিউতে এসব বিষয় বিবেচনায় নেবেন। খন্দকার মাহবুব বলেন, একাত্তরের সেপ্টেম্বরে নিজামী পূর্ব পাকিস্তানি ইসলামী ছাত্রসংঘের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি তৎকালীন পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। এ কারণে আলবদর গঠনের জন্য তাকে দায়ী করা যায় না। নিজামী একজন আলেম ব্যক্তিত্ব এবং এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ওপরে যতগুলো বই লেখা হয়েছে তাতে আলবদর বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে কোথাও তার নাম নেই। বরং সাক্ষ্যে আছে— আলবদর বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন  কোনো সরাসরি প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, নিজামীকে ট্রাইব্যুনাল চারটি অভিযোগে ফাঁসি দিয়েছিলেন। এর মধ্যে আপিল বিভাগ রায়ে তিনটি বহাল রেখেছেন, আর একটিতে খালাস দিয়েছেন। আপিলের রায়ে আপিল বিভাগ সাক্ষ্য পর্যালোচনায় অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেননি। আমরা বিশ্বাস করি রিভিউ হলে তারা ভালোভাবে বিষয়টি দেখবেন। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মতিউর রহমান নিজামীকে গত ৬ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ইতিমধ্যে নিজামীকে কারাগারে মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে। তবে এখন রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর