বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

অপারচুনিটি ইজ ইন বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপারচুনিটি ইজ ইন বাংলাদেশ

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে এখন অর্থ বিনিয়োগ করা তাদের জন্য একটি সুযোগ। অর্থাৎ ‘অপারচুনিটি ইজ ইন বাংলাদেশ’। সবদেশে এ ধরনের সুযোগ থাকে না। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা বলেন। পটুয়াখালীর পায়রায় বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের ইপিসি চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রাজধানীর একটি হোটেলে তিনি আরও বলেন, এরপর আমরা ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনা নিয়েছি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে সে অনুপাতে এদেশের উন্নতিও হচ্ছে। বিদ্যুতের ব্যবহার শুধু ২৪ হাজার মেগাওয়াটেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর ব্যবহার বাড়তে থাকবে। তবে আমি মনে করি আমাদের নিজস্ব সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আর পায়রা বিদ্যুেকন্দ্র হচ্ছে তার উদাহরণ। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগগুলোর একটি। আমি আশা করি চীন-বাংলাদেশের মধ্যে আসছে দিনগুলোতে এই ধরনের বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি এই মন্ত্রণালয়ে অত্যন্ত গতিশীল একটি টিম পেয়েছি। প্রথমদিকে যখন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেই তখনকার কাজ খুব কঠিন ছিল। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা একটি চ্যালেঞ্জ। গত আড়াই বছর ধরে আমরা একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। আর উপর থেকে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রতিটি কাজে আমাদের সঙ্গে আছেন। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী প্রতিটি কাজে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। চাইনিজদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করা উচিত। দেশের উন্নয়নে আমাদের প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের কাছে এখন প্রতিদিনই চার থেকে পাঁচজন বৃহৎ বিনিয়োগকারী আসছেন। আমরা ধীরে ধীরে একটি বিনিয়োগকারী দেশে রূপান্তরিত হচ্ছি। দেশের বাইরে গিয়ে বিদেশে কীভাবে অর্থ বিনিয়োগ করা যায় আমরা সে বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করছি। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্পটি আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক মাইলস্টোন। চীন যে আমাদের ভালো বন্ধু তা আবারও প্রমাণিত হলো। চায়না সিএমসি’র প্রেসিডেন্ট ওয়াং জুসেং বলেন, আমি আশা করছি এই বিদ্যুেকন্দ্রটি বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীনের মধ্যকার বন্ধুত্ব প্রকাশ পায়। দুই দেশের মধ্যে এই ধরনের সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। এটি সিএমসি’র বাংলাদেশে প্রথম বিনিয়োগ কিন্তু এটিই শেষ নয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জ্বালানি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংসেয়াং প্রমুখ। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড-এর কোম্পানি সেক্রেটারি দীপক কুমার ঢালী ও চীনের পক্ষে এনইপিসি-এর প্রেসিডেন্ট চাই মিং এবং সিইসিসি-এর প্রেসিডেন্ট চেন ইউইউ-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানানো হয় এই কেন্দ্রের পার ইউনিট বিদ্যুতের দাম হবে ৬ টাকা ৬৫ পয়সা। এ ছাড়া এই প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির অগ্রগতি হয়েছে। এই এপ্রিলেই ইপিসি কাজ শুরু করবে। আশা করা হচ্ছে প্রকল্পের প্রথম ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) ২০১৯ এর জুনে এবং দ্বিতীয় ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) ২০১৯ এর ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসবে। 

সর্বশেষ খবর