সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

আইএলওকে পাল্টা প্রশ্ন তোফায়েলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইএলওকে পাল্টা প্রশ্ন তোফায়েলের

বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে এসে পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়লেন সফররত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কর্মকর্তারা। গতকাল দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রশ্নোত্তর পর্বে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আইএলও প্রতিনিধিকে উদ্দেশ করে জানতে চান, আপনারা কি ভিয়েতনামের ট্রেড ইউনিয়ন সম্পর্কে আলোচনা করেন? উত্তরে আইএলও-এর এক প্রতিনিধি হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। এবার মন্ত্রীর প্রশ্ন তাদের একজন শ্রমিক নেতার নাম বলুনতো? এবার আর উত্তর দিতে পারেননি আইএলও কর্মকর্তারা। এ সময় মন্ত্রী বলেন, চীন, ভিয়েতনামে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকলেও সেখানে আন্তর্জাতিক চাপ নেই। বাংলাদেশ উন্নতির পথে রয়েছে সেখানে নানা রকম বিদেশি চাপও বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স ও শ্রমমান পর্যালোচনা করতে ঢাকা সফর করছে আইএলও-এর একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। জাতিসংঘে কেনিয়ার প্রতিনিধি মিনিস্টার কাউন্সিলর, লেবার মিসেস এলিজাবেথ ফেইথ অনুকো ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ সময় প্রতিনিধিদল জানতে চায় রানা প্লাজা পরবর্তী প্রেক্ষাপটে দেশের পোশাক কারখানা পরিদর্শনে ২০১৮ সালের পর অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান থাকবে কি না। জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ওই সময়ের পর আর তাদের দরকার নেই। বরং সরকার কারখানা পরিদর্শনের বিষয়টি নিজের দায়িত্বে চালিয়ে যাবে বলে জানান মন্ত্রী। বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সমালোচনা করে বলেন, তাদের পরিদর্শনের কারণে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে। যেটি শ্রম খাতে বরং আরও সমস্যা বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শ্রমিক সংগঠন এএফএল-সিআইও-এর সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের দেশের শ্রমিক সংগঠনের ব্যাপারে জানতে চাওয়ার পর তারা জানালো সেখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) সরকারি খাতে ৩৫ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে মাত্র ৭ শতাংশ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা পায়। সারা বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা বেশি ভোগ করছে বলে এ সময় জানান মন্ত্রী। আইএলও প্রতিনিধি দল ইপিজেড-এ ট্রেড ইউনিয়ন সুযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সরকার ইপিজেড শ্রমিকদেরও দরকষাকষির সুযোগ দিয়েছে সংশোধিত আইনে। ইপিজেড-এর শ্রমিকদের ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যেখানে তারা এর মাধ্যমে মালিকপক্ষের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারছেন। আইএলও-এর সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসপি পুনর্বহালের বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে শর্ত পূরণের কোনো বিষয় নেই। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র যখন জিএসপি স্থগিত করেছিল সেটিও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই ছিল। এ সময় কোনো দেশের নাম উচ্চারণ না করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে কেউ কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না। বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী হলেও পরাজয়ের গ্লানি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

সর্বশেষ খবর