সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুনির্দিষ্ট অভিযোগে শফিক রেহমান গ্রেফতার : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, অপরাধে সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকায়ই শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে সাংবাদিকতার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। যেমন মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদকেও সংবাদপত্র চর্চার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি।

গতকাল সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়— আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী  এই নীতি কার্যকর করছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট ও ভিন্ন অপরাধজনিত কাজের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণেই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হওয়ার জন্য শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনের পূর্ণ সুযোগ আছে। নির্দোষ হলে তিনি সসম্মানে বেরিয়ে আসবেন। এটা সংবাদপত্র, গণমাধ্যম বা আইনের শাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশে দুই হাজার ৮০০ মুদ্রিত সংবাদপত্রে একজন করে সম্পাদক আছেন। এর মধ্যে বিক্ষিপ্ত-বিচ্ছিন্ন কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, সাগর-রুনির বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি, সে ব্যাপারে আমরা দুঃখিত। তবে মামলাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। তদন্ত চালাচ্ছি, আশা করছি সুরাহা হবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর থেকে প্রকাশিত ২০১৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যেসব বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে সে বিষয়ে সরকারের বক্তব্য তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তথ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে স্বীকার করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী, সংসদীয় গণতন্ত্র চলছে। এ জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, রিপোর্টে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নিখোঁজ, উগ্রবাদীদের দ্বারা ব্লগার হত্যা, সংবাদপত্র ও অনলাইনের মতপ্রকাশের ওপর বিধিনিষেধ, বাধ্যতামূলক বিবাহ, লৈঙ্গিক সহিংসতা, শ্রমিকদের অধিকার ও নিম্নমানের কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন, বিনাবিচারে আটক, শিশু শ্রম, ধর্মীয় ও নৃ-গোষ্ঠীগত সংখ্যালঘুদের সামাজিক দমন ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কোনো অধিকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেওয়া হয়নি। সরকার সমর্থন তা করে না। কেউ যদি এরকম ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে তার বিচার হচ্ছে। একইভাবে জঙ্গি দমনেও বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে জিরো টলারেন্স। তারপরও মাঝে মধ্যে জঙ্গিদের হামলায় ব্লগার লেখক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এসব হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারে বিন্দুমাত্র উদাসীনতা নেই। হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যম স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ ও চর্চা করছে। সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কোনো রকম চাপের মুখে নেই। সমালোচনা করার, মত প্রকাশে ভিন্নমত চর্চার আইনগত সব অধিকার ভোগ করছে। তিনি বলেন, আইনের শাসন কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয় না। গণতন্ত্র সংকুচিত নয়, গণতন্ত্রে সব মতের জায়গা রয়েছে, জঙ্গিদের নেই। স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমেও উসকানি, মিথ্যাচার, খণ্ডিত তথ্য ও পীত সাংবাদিকতার কোনো জায়গা নেই। তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রিপোর্টে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক প্রতিফলন হয়নি। এতে তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে রিপোর্টটি আরেকবার যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর