রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েন, তার দেশের ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায় দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গতকাল বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর পণ্য কোথায়-কীভাবে-কোন প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত হচ্ছে, সেটার পূর্ণ দায়িত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ তাদের নিতে হবে। ডেসমন্ড সোয়েন এ সাক্ষাত্কারে বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প খাতে ব্রিটিশ সরকার যে সহায়তা দিয়েছে, তাতে গার্মেন্ট কারখানাগুলোর অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি জানান, ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দফতর এক কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের এক কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশে রানা প্লাজার আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন, কারখানাগুলোকে নিরাপদ করা এবং শ্রমিকদের প্রশিক্ষণে সহায়তা দিচ্ছে। এই কর্মসূচির ফলে পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। তিনি বলেন, রানা প্লাজার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ তহবিলে সব অর্থ জমা পড়েছে। দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রমিকদের আরও বেশি অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে শ্রমিক আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রায় ১০ লাখ শ্রমিককে কারখানা নিরাপত্তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৫৮৫টি পরিদর্শকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৫টি পদে নিয়োগও দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ব্রিটিশ সরকার মনে করছে এসবের ফলে বাংলাদেশের কারখানাগুলো আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি নিরাপদ। তবে অনেক কাজ এখনো বাকি। এখনো ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ, আর নামমাত্র মজুরিতে কিছু কারখানায় কাজ করানো হচ্ছে। অনেক নামকরা ব্র্যান্ডও সেসব কারখানায় পোশাক তৈরি করাচ্ছে। তিনি বলেন, ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো যাতে এরকম কারখানার সঙ্গে ব্যবসা না করে, সেজন্য তাদের দায়িত্বশীল হতে হবে, ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোকে তাদের সাপ্লাই চেইনের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাদের পণ্য কোথায় কীভাবে, কি প্রক্রিয়ায় তৈরি হচ্ছে— তা দেখতে হবে। কারণ এক্ষেত্রে যদি খারাপ কিছু ঘটে, তার জন্য তাদেরই সুনামের বিরাট ক্ষতি হবে। ব্রিটিশ মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প অর্থনীতির ১৪ শতাংশ দখল করে আছে। এটি বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের বড় খাত। চল্লিশ লাখ মানুষ কাজ করছে এই খাতে। ভবিষ্যতে আরও উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরির দিকে যাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। কিন্তু এ জন্য বিনিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ দরকার।—প্রতিদিন ডেস্ক