শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
নিশা দেশাই ঢাকা আসছেন বুধবার

মলার পেছনে জঙ্গি সংগঠন

———— মার্কিন ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পেছনে দায়ী চরমপন্থি গ্রুপগুলো। মধ্যপন্থি বাংলাদেশে চরমপন্থিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটি।

মার্কিন ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এসব হামলায় রাজনৈতিক বিরোধীদের দায়ী করলেও প্রাপ্ত প্রমাণাদি নির্দেশ করে যে, হামলার জন্য চরমপন্থি গ্রুপগুলোই দায়ী। তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশে আইএসের শিকড় গেড়ে বসার সম্ভাবনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। বৃহস্পতিবার হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে ‘এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি’ বিষয়ক এক শুনানিতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন ব্লিঙ্কেন। এ খবর বার্তা সংস্থা এপির। এদিকে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থিদের মোকাবিলায় ঢাকা-ওয়াশিংটন সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনায় আগামী বুধবার দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। বাংলাদেশে উগ্রপন্থিদের নৃশংস হামলার ঘটনা আচমকা বেড়ে যাওয়া, সর্বশেষ কলাবাগানে মার্কিন মিশনের কর্মকর্তা ও তার বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যার পর ঢাকার সঙ্গে জোরালো আলোচনা চাইছে ওয়াশিংটন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে ইউএসএইডের এক কর্মী হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত এ দেশটির ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঐতিহ্য আছে। তবে বাংলাদেশ বর্তমানে চরমপন্থিদের হুমকিতে রয়েছে। লেখক, ব্লগার, বিদেশি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক প্রাণঘাতী হামলার পেছনে আন্তর্জাতিক জিহাদি গোষ্ঠীগুলো রয়েছে বলে স্বীকার করে না বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু ইউএসএইডের কর্মী ও সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নানকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদা অন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্টের বাংলাদেশ শাখা। এ দায় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু এসব ঘটনা ভীতি বাড়াচ্ছে যে, স্থানীয় চরমপন্থিরা বাংলাদেশে আল-কায়েদা বা আইএসের মতো গোষ্ঠীগুলোর অবস্থান পাকাপোক্ত করার সুযোগ করে দিতে পারে, যে দেশটি এমনিতেই শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যকার তিক্ত বিভক্তির কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিধ্বস্ত। শুনানিতে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে রিপাবলিকান দলের কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবোটের প্রশ্নের জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেন, যদিও সরকার এসব হামলার জন্য রাজনৈতিক বিরোধীদের দায়ী করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত প্রমাণাদি নির্দেশ করছে যে, এসব হামলার জন্য চরমপন্থি গ্রুপগুলো দায়ী। এরা হতে পারে স্থানীয় কিংবা আইএস/আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, ‘এসব ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশে আইএসের শিকড় গেড়ে বসতে পারার সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন করে। কোনোভাবেই এটা আমরা চাই না।’ মানবাধিকার সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে যে, অন্যরাও জঙ্গিদের হত্যার হুমকিতে আছে। কারণ, সরকার তাদের দুর্দশা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। কারণ সরকার হয়তো কিছু ব্লগারের নাস্তিক্যবাদী লেখালেখিতে ক্ষুব্ধ, তারা মুসলিমদের সমর্থন হারাতে চায় না। কর্তৃপক্ষ কিছু মামলায় কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। কিন্তু এদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ এখনো মূলহোতাদের চিহ্নিত করতে পারেনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর