শনিবার, ৭ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের সামনে কিশোরকে নির্যাতন হাসপাতালে মৃত্যু!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামে পুলিশের সামনে লিটন মিয়া (১৫) নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিটনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। তবে লিটনকে তাদের সামনে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল নিহত কিশোরের লাশের ময়নাতদন্ত হবিগঞ্জ সদর জেলা হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জমির মাটি কাটা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি চারিনাও গ্রামের পঞ্চায়েত নেতা জহুর আলীর ছেলে জামিল মিয়া একই গ্রামের শাহজাহান মিয়াকে মারধর করেন। এর জের ধরে পরদিন উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত জহুর আলী (৭০) ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে রাজিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল আউয়াল সদর মডেল থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর চৌধুরীসহ চারিনাও, ভাদুপাশা ও শেরপুর গ্রামের লোকজনসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার ৬২তম আসামি ছিল লিটন মিয়া। সে সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন পায়। তার এ জামিন সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি বাদীপক্ষের লোকজন। লিটন মিয়ার নামে গত মাসের ২১ তারিখে ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও একটি মামলা দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে লিটনকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন আবদুল আউয়াল, জামিল মিয়াসহ তাদের স্বজনরা। পরে তারা লিটনকে মারধর করে হবিগঞ্জ সদর থানায় আসামি আটকের খবর দেন। খবর পেয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র হাজরার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতিতে লোকজন লিটনকে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় লিটনকে ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১১টার দিকে মারা যায় লিটন।

লিটনের বাবা তাউছ মিয়ার দাবি, তার ছেলেকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে নির্যাতন করেন আবদুল আউয়াল ও তার ভাই জামিল মিয়া। এ নির্যাতনেই তার ছেলে প্রাণ হারিয়েছে।

হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, বাড়ি ভাঙচুরের একটি মামলার আসামি ধরতে পুলিশ চারিনাও গ্রামে যায়। দুজন আসামি ধরে থানায় ফেরার সময় জহুর আলী হত্যার বাদী আবদুল আউয়াল ফোনে পুলিশকে জানান, তারা আরও একজন আসামি ধরে ফেলেছেন। পুলিশ ফোন পেয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় লিটনকে গ্রহণ করে। পরে পুলিশ লিটনকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে লিটন মারা যায়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি। লিটন মিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে আনা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র হাজরা বলেন, লিটন মিয়াকে তারা আহত অবস্থায় পেয়েছেন। তবে তাদের সামনে লিটনকে মারধরের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান  বলেন, লিটন মিয়াকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনে পুলিশ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

সর্বশেষ খবর