রবিবার, ১৫ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

পাকিস্তান-তুরস্কের বিষয়ে কড়া অবস্থান নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাকিস্তান-তুরস্কের বিষয়ে কড়া অবস্থান নিতে হবে

মে. জে. মাসুদুর রহমান (অব.)


মেজর জেনারেল (অব.) মো. মাসুদুর রহমান বীরপ্রতীক বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচার এবং রায় কার্যকর নিয়ে তুরস্ক অহেতুক নাক গলাচ্ছে। আর পাকিস্তান কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করছে। তাদের এই ঔদ্ধত্য আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ড মেনেই    যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই মুহূর্তে সরকারের উচিত কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ জানানো। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কাউকে নাক গলানোর সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে টেলিফোনে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হচ্ছে। রাষ্ট্রের ও যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে আইনজীবী উভয়ই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় উভয় পক্ষের শুনানির পর আদালত রায় ঘোষণা করছে। অন্যান্য দেশে যুদ্ধাপরাধীরা আপিল করার সুযোগ না পেলেও বাংলাদেশে তা করছে। কাজেই যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে তুরস্ক ও পাকিস্তান অহেতুক নাক গলাচ্ছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান নাক গলাবে-এটা স্বাভাবিক, কারণ ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা তাদের সহযোগিতা করেছিল, এ দেশের পথঘাট দেখিয়ে দিয়েছিল তাদের এখন বিচার করা হচ্ছে। কুখ্যাত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীরা পাকিস্তানের মিত্র ছিল। সেই মিত্রদের বিচার করার ও রায় কার্যকরের সময় পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া দেখাবেই। তবে এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। কারণ আমাদের স্বাধীন দেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীর বিচার করছি এটা নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। মাসুদুর রহমান বীরপ্রতীক বলেন, পাকিস্তানের ভাবা উচিত তারা ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর আমাদের কাছে মাথানত করে আত্মসমর্পণ করেছিল। তারা সিমলা চুক্তি করে সে দেশের ১৯৩ জন সেনা সদস্যের বিচার করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত সে বিচার করেনি। এ ছাড়া এই দেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের (বিহারি) এখনো নিয়ে যায়নি। তাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। এমনিতে আমাদের জনবহুল দেশ। তাদের আশ্রয় দেওয়ায় অর্থনীতিসহ নানাভাবে চাপ বাড়ছে। অন্যদিকে পাকিস্তান ভাগ হওয়ার সময় আমাদের অর্থের ভাগ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা দেয়নি। এখন তাদের সহযোগী এ দেশের দোসরদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার পর তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এসেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরাজিত পাকিস্তানের কথা বলা মানায় না— এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারেও যায় না। তবে পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য এই মুহূর্তে সরকারের উচিত কড়া ভাষায় এর জবাব দেওয়া। বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-আইএসের অস্তিত্ব আছে কিনা জানতে চাইলে সাবেক এ মেজর জেনারেল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই। যা কিছু ঘটছে যুদ্ধাপরাধীর সহায়ক শক্তিরা কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আইএস বলে প্রচার করছে। বাস্তবতা হলো বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই। দেশে কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও নেই বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর