শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
লন্ডনে সমাবেশে শেখ হাসিনা

সরকার উৎখাতে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিএনপি

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তার সরকারকে উত্খাত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিএনপি। তিনি দেশবাসীকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের বিরুদ্ধে যেমন ষড়যন্ত্র করছে, তেমনি ইসলামের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে লন্ডনে এক দলীয় কর্মিসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখন এতটাই বেপরোয়া যে, তারা সবাই মিলে আমাকে     উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। তারা যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে তারা প্রতিনিয়িতই ফিলিস্তিনে নারী-শিশুকে হত্যা করছে। শেখ হাসিনা বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির আত্মার আত্মীয়তা। ফিলিস্তিনের শান্তিকামী জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন ও সহমর্মিতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে শুধু ক্ষমতার লোভে এরা বর্তমান সরকারকে উত্খাতের ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে রাজনীতি করলেও এরা যে নিজেদের জন্যই শুধু রাজনীতি করে এটিই প্রমাণ দিয়েছে মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুকের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৪৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ সভাপতি অনিল দাসগুপ্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ সামসুদ্দিন খান, সহসভাপতি জালাল উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক নঈমুদ্দিন রিয়াজ মারুফ চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

সরকার উত্খাতে বিএনপির বহুমুখী ষড়যন্ত্র সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের চলমান উন্নয়নে সরকারের ভূমিকায় মানুষ সন্তুষ্ট। সুতরাং উন্নয়নমুখী জনগণের সামনে কোনো ষড়যন্ত্রই টিকবে না। দেশের জনগণই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে, সব ষড়যন্ত্রেরই বিচার হবে। আইন তার আপন গতিতে চলবে। আইনের হাত থেকে দোষী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

মানুষ পোড়ানো আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন গুপ্তহত্যা শুরু করেছে, এমন অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, বিদেশি নাগরিক, ব্লগার, শিক্ষাবিদ একের পর এক গুপ্তহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকান অ্যাম্বাসির সাবেক কর্মকর্তা জুলহাজকে হত্যা করে ওরা বিশ্বব্যাপী একটি আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছে। আসলে, একাত্তরের ঘাতকদের সেই গণহত্যার ধারাবাহিকতায়ই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু সেটি শেষ করে যেতে পারেননি। আমরা সেই কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছি বলেই যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনকারী দল বিএনপি আজ মরণ কামড় দিতে চায়। কিন্তু তারা হয়তো জানে না বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাকিপ্রেমীদের মুখোশ এখন উন্মোচিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায় কার্যকরও হচ্ছে। একাত্তরের ঘাতকদের গাড়িতে যারা রক্তে অর্জিত আমাদের পতাকা তুলে দিয়েছিল তাদেরও বিচার হবে বাংলার মাটিতে। কারণ অন্যায় যে করে আর অন্যায়কে যারা প্রশ্রয় দেয় তারা সমান অপরাধী। প্রবাসীদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বিজয়ী জাতি। বিএনপি-জামায়াতকে একাত্তরের পরাজিত শক্তির পদলেহনকারী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক দল পরাজিতদের পদলেহন করবে জনগণ এটা মেনে নেবে না। এদের বিরুদ্ধে জাতির যত ঘৃণা। পাকিপ্রেম নিয়ে আর যাই হোক মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে রাজনীতি করা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী বুলগেরিয়ায় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুলগেরিয়ার রাজধানীতে অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল ওমেন লিডারস ফোরামে অংশ নিতে গতকাল সকালে লন্ডন থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুরে সোফিয়া পৌঁছান। তিন দিনের এই সরকারি সফরে তিনি বুলগেরিয়ার প্রেসিডেন্ট রোজেন পেনিলিয়েভ ও প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন।

সর্বশেষ খবর