শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিলেটে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ঐতিহাসিক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ৫২ শতাংশ জনগণ। এর ফলে প্রায় সাড়ে তিন যুগ পর ইইউ ছাড়তে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ার ফলে কর্মক্ষেত্রে অভিবাসীরা সহঅবস্থানে বেশি সুবিধা পাবেন— এমন মন্তব্য করছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে অনেকেই বলছেন, ইইউ ছাড়ার  এরপর পৃষ্ঠা ২ কলাম ৬সিলেটে মিশ্র ফলে দীর্ঘমেয়াদে কুফল ভোগ করতে হবে। প্রায় ৪১ বছর আগে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটিতে (ইইসি) যোগ দেওয়ার প্রশ্নে গণভোট দিয়েছিল যুক্তরাজ্যবাসী। তাতে ৬৭ শতাংশ ইইসির পক্ষে ভোট দিয়েছিল। তবে এবার ঐতিহাসিক গণভোটে যুক্তরাজ্যের ৫২ শতাংশ মানুষ ইইউ ছাড়তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যুক্তরাজ্যের জনগণ ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার আভাস মিলছে। যুক্তরাজ্যের রাজনীতি, অর্থনীতি তো বটেই, গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়িয়ে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতিও এতে টালমাটাল হওয়ার আশঙ্কা আছে। যুক্তরাজ্যের জনগণের ঐতিহাসিক এ রায়ে সেখানে বসবাসরত সিলেটিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রবাসীদের কেউ কেউ ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও অনেকেই এর বিরোধিতা করছেন। সিলেটি প্রবাসীদের কেউ কেউ বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ায় যুক্তরাজ্যে তাদের কাজের বাজার বাড়বে। তবে অনেক প্রবাসীর মতে, যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ায় দীর্ঘমেয়াদে এর কুফল ভোগ করতে হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন খাতে এশিয়ানদের অবদান উল্লেখযোগ্য। অথচ সে তুলনায় অভিবাসী উন্নয়ন ফান্ডসহ বিভিন্ন ফান্ড ব্যবহার করে ইইউভুক্ত দেশগুলো। এবার যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ায় সেসব ফান্ড এশীয় তথা বাংলাদেশিরাও ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। যুক্তরাজ্যের বেথানাল গ্রিন শহরে বসবাসকারী কাজী মাসুম বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বের হয়ে গেলে সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও এশিয়ার অধিবাসীরা উপকৃত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যুক্তরাজ্য থেকে শুধু সুবিধাই নিয়ে যাচ্ছে, বিনিময়ে তারা যুক্তরাজ্যকে কিছুই দিচ্ছে না। অভিবাসীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধায় ইইউভুক্ত দেশগুলো ভাগ বসাচ্ছে। কিন্তু তারা যুক্তরাজ্যের জন্য কিছুই করছে না। বাংলাদেশসহ এশিয়ার অধিবাসীরা যুক্তরাজ্যের মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তারা যুক্তরাজ্যের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে ইইউভুক্ত দেশগুলো।

একই শহরে বসবাসকারী স্কুল শিক্ষিকা নারগিস সুমি বলেন, যুক্তরাজ্য ইইউর অন্তর্ভুক্ত থাকায় সেখানে বাংলাদেশিদের চাকরি পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য সরে এলে বাঙালিদের জন্য চাকরির সুযোগ আরও বেশি করে সৃষ্টি হবে। যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহী হবে। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, যুক্তরাজ্য ইইউতে না থাকলে বাংলাদেশিদের কোনো ক্ষতি হবে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেরই লাভ হবে। তবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, ক্ষুধা, দরিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ব গড়ার যে আন্দোলন চলছে, সেই আন্দোলন জোরদার করতে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের থাকা জরুরি। ইইউর সঙ্গে থাকলে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্য দেশগুলোতে কাজ ও পড়ালেখার সুযোগ পাবে।

সর্বশেষ খবর