বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ডাচ-বাংলা চেম্বার সভাপতির লাশ মিলল বুড়িগঙ্গায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাচ-বাংলা চেম্বার সভাপতির লাশ মিলল বুড়িগঙ্গায়

হাসান খালেদ

ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি হাসান খালেদ (৫৫) নিখোঁজের তিন দিন পর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় বুড়িগঙ্গা নদীর সাইনবোর্ড ঘাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার হাসান খালেদ নিখোঁজ জানিয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার শ্যালক শরীফুল আলম। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গলিত অবস্থায় বুড়িগঙ্গা নদীর ঘাটে লাশটি দেখে আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় লাশের প্যান্টের পকেটে থাকা ভিজিটিং কার্ড দেখে হাসান খালেদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। আর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে মৃত্যুর কারণও বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছিলেন হাসান খালেদ। নেদারল্যান্ডস থেকে ক্রকোডাইল গার্মেন্ট পণ্যের বাংলাদেশি আমদানিকারক ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তার একটি কনসালট্যান্সি ফার্ম আছে। তার ব্যবসায়িক অফিস নিউ ইস্কাটনে। কলেজপড়ুয়া একমাত্র সন্তান জেবা ও স্ত্রী দিলারাকে নিয়ে ধানমন্ডির ৪/এ নম্বর রোডের ৪৫ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। তার বাবার নাম মোহাম্মদ মহসিন। গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঞা থানার শুভপুর গ্রামে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনিই সবার বড়। পুলিশ জানায়, নিখোঁজ হওয়ার সময় মোবাইল ফোনে খালেদের সর্বশেষ অবস্থান ছিল তার বাসার আশপাশে। কিন্তু ওই এলাকা থেকে কেউ তাকে তুলে নিয়েছে এ রকম দৃশ্য কারও চোখে পড়েনি। ওষুধ কেনার জন্য তিনি বাসা থেকে বের হলেও আশপাশের কেউ তাকে কোনো ওষুধের দোকানে যেতে দেখেছেন কি না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়িক বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এমনকি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া জানিয়েছিলেন, বাসার আশপাশ এলাকাতেই তার ফোনটি বন্ধ হয়ে গেছে বা বন্ধ করা হয়েছে। খালেদের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান দেখা গেছে ধানমন্ডির ৪/এ নম্বর সড়কের আশপাশ এলাকায়। আর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কারও সঙ্গে খালেদের কোনো শত্রুতা আছে বলে তাদের জানা নেই। তাকে কেউ কখনো হুমকি-ধমকিও দেয়নি। ভদ্র-শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের নিন্দা: ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিবিসিসিআই) সভাপতি হাসান খালেদ আকষ্মিক নিখোঁজ হওয়ার পর, তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর নিন্দা জানিয়েছে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন—এফবিসিসিআই। সংগঠনটি ব্যবসায়ী নেতা হাসান খালেদের মৃত্যুতে আন্তরিক দু:খ প্রকাশ করছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এফবিসিসিআই বলেছে, মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এফবিসিসিআই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ও  দায়িত্বশীল  পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে  অল্প সময়ের মধ্যেই দোষীদের গ্রেফতার করার করার দাবি জানাচ্ছে এফবিসিসিআই ।

 

সর্বশেষ খবর