শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

এক পদ ছাড়তে চিঠি যাচ্ছে বিএনপির ৪৮ নেতার কাছে

মাহমুদ আজহার

‘এক নেতার এক পদ’ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এবার জেলা ও থানা পর্যায়ের অন্তত ৪৮ জন নেতা ঠাঁই পেয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে। সহ-সম্পাদক থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে এসব নেতার কাছে শিগগিরই চিঠি পাঠাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। আজ দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেও  কমিটির সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। কেউ স্বেচ্ছায় এক পদ রেখে বাকিগুলো না ছাড়লে তাদের ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। তবে জেলার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে থাকলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে গতকাল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মো. শাহজাহান যথাক্রমে সিরাজগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলার সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রাতে তারা চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই আরও বেশ কিছু নেতা জেলার নেতৃত্ব ছাড়বেন বলে জানা গেছে। এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁও জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও যুবদলের নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়ারপারসনের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে ‘এক নেতার এক পদ’ কার্যকর করা হবে। এতে বহু নেতাকে কমিটিতে সম্পৃক্ত করা যাবে। আশা করছি, খুব শিগগিরই নেতারা নিজের পছন্দসই পদ রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেবেন।’ মঙ্গলবার দলের যৌথসভায় মির্জা ফখরুল কেন্দ্রীয় নেতাদের এক পদ রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তার ব্যাপারে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে। জানা যায়, দলের স্থগিত থাকা জেলা পুনর্গঠনে কাজ শুরু করতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে নির্দেশ দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল তিনি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ নিয়ে কাজও করেন। এ সময় ৪৮ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে চিহ্নিত করা হয়, যারা কেন্দ্রের সহ-সম্পাদক থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। এ তালিকা আজকালের মধ্যেই বেগম জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওই তালিকা ধরে বিএনপি প্রধান জেলা নেতাদের কাছে চিঠি পাঠাবেন। চিঠিতে এক পদ রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। যদি কেউ স্বেচ্ছায় পদ না ছাড়েন, তাদের ব্যাপারে কেন্দ্র থেকেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপরই পুরোদমে জেলা পর্যায়ে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে। জানা যায়, জেলা ও থানার নেতৃত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতারা হলেন— পটুয়াখালীর আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরিশাল মহানগরের মজিবর রহমান সরোয়ার, ফরিদপুরের শাহজাদা মিয়া, চাঁদপুরের ফরিদ হোসেন মানিক, লক্ষ্মীপুরের আবুল খায়ের ভূইয়া, নোয়াখালীর জয়নুল আবদিন ফারুক, চট্টগ্রাম দক্ষিণের শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জের কলিম উদ্দিন মিলন, হবিগঞ্জের জিকে গউস, কিশোরগঞ্জের অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ময়মনসিংহ দক্ষিণের এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জয়পুরহাটের মোজাহার হোসেন প্রধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রাজশাহী মহানগরের মিজানুর রহমান মিনু, নাটোরের অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, লালমনিরহাটের আসাদুল হাবিব দুলু, নীলফামারীর শামসুজ্জামান, খুলনা মহানগরের নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মাগুরার অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, কুষ্টিয়ার মেহেদী আহমেদ রুমী ও অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, গাজীপুরের ফজলুল হক মিলন, ঢাকা জেলার আবদুল মান্নান ও আমানউল্লাহ আমান, নারায়ণগঞ্জের অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, নরসিংদীর খায়রুল কবীর খোকন, টাঙ্গাইলের অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, মানিকগঞ্জের আফরোজা খানম রীতা, মইনুল ইসলাম শান্ত, খাগড়াছড়ির আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম উত্তরের আসলাম চৌধুরী প্রমুখ। একইভাবে অঙ্গসংগঠনে একাধিক পদে থাকাও বেশ কিছু নেতা রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, ‘কাউন্সিলের কারণে জেলা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত ছিল। এখন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা হয়েছে। তাই জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে। অনেকেই জেলার নেতৃত্বেও আছেন আবার কেন্দ্রেও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। যেহেতু ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি কার্যকর  করা হচ্ছে, তাই জেলা নেতাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। এক পদের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই জেলা কমিটি পুনর্গঠনে কাজ করতে সুবিধা হবে।’

সর্বশেষ খবর