সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সরকারি ছকে নির্বাচন হওয়া না হওয়া একই কথা

শফিউল আলম দোলন

সরকারি ছকে নির্বাচন হওয়া না হওয়া একই কথা

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকারের ছক অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হলে সেটি হওয়া আর না হওয়া একই কথা। কারণ তখন দেশের পরিস্থিতি হবে সেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতোই। এ নির্বাচন কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সরকার যদি মনে করে এক দলীয় বাকশাল কায়েম করবে, তাহলে সেটি পরিষ্কারভাবে ঘোষণা দিলেই হয়। তবে প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করলে পরিণতি ভালো হবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, গণতন্ত্র ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আর কালবিলম্ব না করে অতি শিগগিরই নিরপেক্ষ ব্যবস্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক দল। শত ভোট ডাকাতি ও কেন্দ্র দখলের পরও প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা তথা নির্দলীয় সরকারের অধীনে। অন্যথায় বিএনপি কোনো প্রহসনের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং তা হতেও দেবে না। জনগণকে নিয়ে তা সর্বাত্মক প্রতিরোধের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব এবং এ দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাল্লাহ।

বিএনপির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষেরই আজ জানমালের নিরাপত্তা নেই। দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণেই আজ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। এই গণতন্ত্র ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা, টেকসই উন্নয়ন কিংবা জঙ্গি দমন কিছুই সম্ভব হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশের চলমান সংকট নিরসনে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে। আর সে নির্বাচনের জন্য দরকার একটি নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা। ‘রকিব মার্কা’ কমিশন দিয়ে এ দেশে কখনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন হতে হবে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা দশ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা কোনো মামলা প্রত্যাহার দূরের কথা, প্রত্যেকের নামে বরং আরও কয়েক ডজন করে নতুন মামলা দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসনের নামেও অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়েছে। দমন-পীড়নের মাধ্যমে সরকার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা মেনে নেবে না। অতীতেও কোনো স্বৈরাচার এ দেশে টিকেনি। আইয়ুব খান, এরশাদ সবাই বিদায় নিয়েছেন। এ সরকারও টিকবে না। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। একটা ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। তিনি দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। ‘দেশনেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ সমস্যাসহ জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। আসুন দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করি।

সর্বশেষ খবর