শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিজ বাসায় খুন হলেন সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

অভিযোগের আঙ্গুল গৃহকর্মীর দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের নিজ বাসায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওয়াজী আহমেদ চৌধুরীর (৭৬) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। বুধবার সকালে মহাখালী ডিওএইচএসের ৪ নম্বর রোডের ১৪৮ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় ওয়াজী আহমেদ চৌধুরীকে উদ্ধার করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরে কাফরুল থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় গৃহকর্মী আবদুল আহাদসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে নিহতের ভাতিজা রিশাদ আহমেদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে কাফরুল থানায় হত্যা মামলা করেন।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলে শিগগিরই উন্মোচিত হবে এর রহস্য। গৃহকর্মী আহাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলেও এর নেপথ্যে অন্যরা রয়েছেন। বুধবার সকালে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে ধারণা পুলিশের। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আহমেদ জানান, কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে। কয়েকজনকে গ্রেফতারে অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কোনো কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। জানা গেছে, মহাখালী ডিওএইচএসের পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরীকে নিয়ে বসবাস করতেন সেনা কর্মকর্তা ওয়াজী আহমেদ চৌধুরী। বড় ছেলে আতিক আহমেদ চৌধুরী আট বছর ধরে নিজ পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ছোট ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী, একই সঙ্গে কানেও কম শোনেন। বাড়িতে নিরাপত্তাপ্রহরী ও গৃহকর্মীই ছিল সেনা কর্মকর্তার ওয়াজীর ভরসা। দুই মাস ধরে সিলেটের বিশ্বনাথের বাসিন্দা আবদুল আহাদ ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। আহাদের খালাতো ভাই আবদুল দীর্ঘদিন ধরে ওয়াজী আহমেদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে আসছিলেন। কিছুদিন আগে তাকেও যুক্তরাজ্যে যেতে সহায়তা করেন ওয়াজী আহমেদ। আবদুলের রেফারেন্সেই আহাদ ওই বাড়িতে কাজে আসেন। নিহতের ভাতিজা রিশাদ আহমেদ চৌধুরী জানান, বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তার চাচাকে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরের বাইরে তালা দিয়ে পালিয়ে  যায়। তার অসুস্থ ছেলে ফুয়াদ পাশের কক্ষে থাকার পরও কিছু টের পাননি। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে তিনি বাবার ঘরে তালা দেখতে পান। সন্দেহ মনে হলে তিনি বিষয়টি অন্যদের জানান। এরপর ঘটনাটি সবাই জানলে ঘরের তালা ভেঙে ভিতরে দেখা যায় ওয়াজী আহমেদের হাত-পা বাঁধা নিথর দেহ পড়ে আছে। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা বাসা থেকে একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোনসহ আনুমানিক এক লাখ ২১ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। আমার আরেক চাচা মেজর জেনারেল (অব.) এজাজ আহমেদ চৌধুরীর ফোন পেয়েই আমি সিএমএইচে গিয়ে এ দুঃসংবাদ জানতে পারি।’ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মো. শফিউজ্জামান বলেন, ওয়াজী আহমেদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর