শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বড় ধরনের জমায়েতের লক্ষ্য বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

বড় ধরনের জমায়েতের লক্ষ্য বিএনপির

৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। এ উপলক্ষে ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে দলটি। সেখানে ব্যাপক গণজমায়েতের চিন্তা করা হচ্ছে। দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর এবারই প্রথম বড় ধরনের জমায়েতের লক্ষ্য। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগরী বিএনপি, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোও পৃথকভাবে যৌথ সভা করছে। সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার দলের যৌথ সভা শেষে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা এখনো জনসভার অনুমতি পাইনি। আশা করি, এ ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’ জানা যায়, মঙ্গলবার চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন মহানগর পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) কার্যালয়ে যান। এ সময় ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে ছিলেন না। অন্য কর্মকর্তারাও কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। গতকালও ডিএমপিতে যোগাযোগ করে কোনো সবুজ সংকেত পায়নি বিএনপি। আগামী রবিবার দলের একটি প্রতিনিধি দল আবারও ডিএমপিতে যাবে বলে জানা গেছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, জনসভার আগের রাতে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সেটা সোহরাওয়ার্দীও হতে পারে আবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করব। ইতিমধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। আশা করছি, অনুমতি পেয়ে যাব। সরকার এখন পর্যন্ত নেগেটিভ কিছু বলেনি। আমরা আশাবাদী, সরকার এতে পজেটিভ রেসপন্স করবে।’ এদিকে গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৮ নভেম্বর জনসভা ঘিরে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে। বর্বর এই পুলিশি হয়রানি বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর শুধু অগণতান্ত্রিক আচরণই নয়, অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার জোরে দেশব্যাপী আধিপত্য বিস্তারের আরেকটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, আসলে আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে না। এজন্যই আওয়ামী লীগ নেতারা ৭ নভেম্বর নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন। কিন্তু যেদিন জনগণ তাদের রায় দেওয়ার সুযোগ পাবে, সেদিন আওয়ামী লীগ বুঝতে পারবে জনগণ ৭ নভেম্বর পালন বা বিশ্বাস করে কিনা! রিজভী আহমেদ বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করছি, প্রশাসন যত শিগগির সম্ভব জনসভার অনুমতি দেবে। কারণ আমরা আশা করি, ক্ষমতাসীন মহলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং গণতন্ত্রের পথচলায় সভা-সমাবেশ করতে কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না তারা। তবে যদি অনুমতি না দেয়, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী কর্মসূচি বা পদক্ষেপ আপনাদের জানানো হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবীর খোকন, বিলকিস জাহান শিরিন, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় চার নেতা হত্যায় জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে তার গড়া দল বিএনপির ৭ নভেম্বরের কর্মসূচি প্রতিহতের হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। ওই হুমকির জবাবে এর আগে রিজভী বলেছিলেন, ‘৭ নভেম্বর হচ্ছে এ দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতাযুদ্ধে স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিপ্লব। এদিন আমাদের কর্মসূচি হবে। আপনারা প্রতিহত করবেন, পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবিকে লেলিয়ে দেবেন। আমরা বলতে চাই, এদিন আমরা শান্তির প্রতীক জলপাইর পাতা নিয়ে মুক্তকণ্ঠে গান গাইতে গাইতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে উপস্থিত হব। দেখি কত গুলি আছে, আপনারা জনগণের শক্তি কীভাবে প্রতিহত করেন।’ বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচি : জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে রয়েছে : ৭ নভেম্বর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সকাল ৭টায় দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা। সকাল ১০টায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। ৮ নভেম্বর রাজধানীতে জনসভা। এ ছাড়াও দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন পৃথকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করছে।

সর্বশেষ খবর