শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফের হামলা নাসিরনগরে

পাঁচ বাড়িতে আগুন। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমা ভাঙচুর। মন্ত্রী ছায়েদুলের পদত্যাগ দাবি। হানিফের গাড়িতে হামলা। আওয়ামী লীগের তিন নেতা বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফের হামলা নাসিরনগরে

নাসিরনগরে পুড়িয়ে দেওয়া ঘর। রাজধানীর শাহবাগে গতকাল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের গাড়িতে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

আবারও হামলা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। গতকাল ভোররাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের পাঁচ দিন পর একই উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। এসব ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

নাসিরনগরের পর হামলার ঘটনা ঘটে হবিগঞ্জের মধুপুর মন্দির ও বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরে। এ ছাড়া হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদরের একটি মন্দির। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের সদ্যনির্বাচিত চেয়ারম্যান পয়গাম আলীকে পুলিশ আটক করেছে। বগুড়ার ধুনটের ইছামতী নদীর তীরে কেন্দ্রীয় শ্মশানঘাটসংলগ্ন মন্দির থেকে চুরি হয়ে গেছে চারটি প্রতিমার মাথা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর আসনের এমপি ছায়েদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক আছে। তার এ বক্তব্যের ১৪ ঘণ্টা পরই নাসিরনগরে দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় তিনি নিজ এলাকা নাসিরনগরেই ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। নাসিরনগরে পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশের মন্দিরগুলোয় অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হামলাকারীদের গ্রেফতারে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার একটি বিষয় কেন্দ্র করে রবিবার নাসিরনগরে প্রায় ১৫টি মন্দির ও ৬০-৭০টি হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরই দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় জড়িতদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এসব হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাজপথে মিছিল-মিটিং ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফকে বহনকারী গাড়ি আন্দোলনকারীদের হামলার মুখে পড়ে। আন্দোলনকারীরা তার গাড়িতে লাথি মারতে থাকেন এবং অনেকে জুতা প্রদর্শন করেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন গতকাল রাজধানীসহ সারা দেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচি থেকে হামলাকারীদের শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর আসনের এমপি ছায়েদুল হকের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনায় অংশ নিয়ে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিনিয়র বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।

হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি—সিপিবিও।

ভারতীয় পত্রপত্রিকায় হামলার খবর প্রকাশ পায়। তবে ভারত সরকার এ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হলেও প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখছে। বৃহস্পতিবার দিল্লির জওহর ভবনে এসব হামলা নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ এ কথা জানিয়েছেন।

ফের হামলা : আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ৩০ অক্টোবরের হামলার পরই নাসিরনগরের পাড়া-মহল্লায় পাহারার ব্যবস্থা করেছিল এলাকাবাসী। পুলিশের কিছু সদস্যও তাদের সঙ্গে ছিলেন। এলাকায় মন্ত্রী, এমপি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন। তার পরও নিজেদের নিরাপত্তায় নিজেরাই উদ্যোগী হয়েছিলেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতেও যথারীতি পাহারায় ছিলেন তারা। ভোর ৩টার দিকে পাহারা শেষে এ দায়িত্বে নিয়োজিত লোকজন যখন বাড়ি ফিরছিলেন, ঠিক তখনই আবার নাশকতা। সবাই যখন ঘুমে অচেতন, তখনই চারটি পাড়ায় আলাদা পাঁচটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুড়ে যায় একটি বাড়ির দুর্গা প্রতিমা।

স্থানীয় লোকজন, প্রশাসন ও পুলিশ বলছে, উপজেলা সদরের মধ্যপাড়ার অমর দেবের রান্নাঘর, দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ফুলকিশোরের গোয়ালঘর, একই এলাকার মৃণালকান্তির রান্নাঘর ও জ্বালানি কাঠ রাখার ঘরসহ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নেভানো হয়। তবে কয়েকটি রান্নাঘর ও গোয়ালঘর পুরোপুরি পুড়ে গেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। গতকাল দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিআইডি পুলিশের চার সদস্যের একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দ করে। সিআইডির ইন্সপেক্টর আলমগীর বলেন, কোনো দাহ্য পদার্থ ছিল কিনা তা তদন্তের জন্য সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। তবে সরেজমিন অনুসন্ধানকালে ধারণা পাওয়া গেছে, পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। কারণ, অল্প সময়ের মধ্যেই ছোট ছোট ঘরগুলো পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।

জগন্নাথপুর গ্রামের সতী রানী বলেন, শুধু আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। কেশব চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা আগুন দেয় বুঝতে পারিনি। আমরা এখন সন্ত্রস্ত।’ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহেন্দ্রচন্দ্র দাস বলেন, তারা সম্ভবত ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।

রবিবার নাসিরনগরে প্রায় ১৫টি মন্দির ও ৬০-৭০টি হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দায়ের করা দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ২ হাজার ৪০০।

নাসিরনগরে আওয়ামী লীগের তিন নেতা বহিষ্কার : উপজেলায় মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে দুর্বৃত্তদের হামলা চালানোর ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ  থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। গত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক ও নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাশেম, তাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ আলী ও হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক মিয়া।

হামলার মুখে হানিফের গাড়ি : মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদে দুপুরে প্রায় আধা ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। অবরোধ চলাকালে ওই পথে যাওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের মন্দির ও বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাটের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলকারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে শাহবাগ এলাকায় গিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকেও কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছিলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ। বিক্ষোভকারীরা তার গাড়ি ঘিরে ধরেন। কেউ কেউ তার গাড়িতে লাথি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি গাড়ি থেকে নেমে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মিছিল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়েছিল। শাহবাগ থানা পুলিশ জানায়, এ সময় একজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে।

সারা দেশে বিক্ষোভ, মানববন্ধন : হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকায় সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদী মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচি থেকে হামলাকারীদের শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, সচেতন হিন্দু পরিষদ, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পূজা উদ্?যাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতি, মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, জগদ্বন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, জাগো হিন্দু পরিষদ, ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ, মহিলা ঐক্য পরিষদ, জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট, জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট, জাতীয় হিন্দু মহাজোটসহ বিভিন্ন সংগঠন গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরে প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনগুলো।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য নিমচন্দ্র ভৌমিক জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে। এসব হামলার মাধ্যমে বিভেদ, অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি এ অবস্থা মোকাবিলার জন্য গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে একসঙ্গে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।

সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিবাদ সমাবেশ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলাকারীদের বিচার ও শাস্তি দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘রুখে দাঁড়াও সাম্প্রদায়িক হায়েনা’ স্লোগানে গান, কবিতা ও নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান সাংস্কৃতিক কর্মীরা। জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক মফিদুল হক, নাট্যব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী, চারুশিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রফিকুল ইসলাম, পথনাট্য পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান কিরণ প্রমুখ।

স্বজনের বিবৃতি : ঢাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন স্বজন (সনাতনী সাংবাদিকদের একটি কল্যাণ প্রয়াস) এক বিবৃতিতে বাড়িঘর লুটতরাজ এবং মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গতকাল ‘স্বজন’-এর শতাধিক সাংবাদিক স্বাক্ষরিত এক যুক্ত বিবৃতিতে সুপ্রিমকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং যে কোনো মূল্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন : শ্যামল দত্ত, অজয় দাশগুপ্ত, মনোজকান্তি রায়, স্বপন দত্ত, সন্তোষ শর্মা, প্রণব সাহা, সুভাষ চন্দ বাদল, আশিষ সৈকত, রাহুল রাহা, অজিত কুমার সরকার, তপন বিশ্বাস, মধুসূদন মণ্ডল, শ্যামল সরকার, কল্যাণ সাহা, দেবাশিষ চক্রবর্তী উত্তম (উত্তম চক্রবর্তী), ড. অখিল কুমার পোদ্দার, চিত্তরঞ্জন কর, অজিত কুমার রায়, তরুণ তপন চক্রবর্তী, ড. উত্পল কুমার সরকার, আশীষ কুমার দে, হরলাল রায় সাগর, রতনচন্দ্র বালো, দীপক আচার্য, অনিমেষ কর, রাজেন্দ্রচন্দ্র দেব মন্টু, সুবীর কুমার নাথ, সেবিকা রানী, স্বপন কুমার দাস, বরুণ ভৌমিক নয়ন, জয়ন্ত আচার্য, কাঞ্চন কুমার দে, শোভন কমল হালদার, অনুপ কুমার খাস্তগীর, আশীষ কুমার সেন, পার্থ প্রতিম ভট্টাচার্য্য, রাজীব ঘোষ, স্বপন সরকার, শ্যামলকান্তি নাগ, অমিতোষ পাল, অমরেষ রায়, রমাপ্রসাদ বাবু, ইন্দ্রজিৎ ঘোষ, অজিত কুমার মহলদার, পংকজ কর্মকার, সঞ্জিত কুমার দাস, স্মৃতিময় ভট্টাচার্য্য, নিতাইপদ দাস, দুলালচন্দ্র দে, বিপ্লব কুমার দীক্ষিৎ, সত্যেন বিশ্বাস, প্রসূন আশীষ, সঞ্জিব কুমার বসাক, প্রণব কুমার মজুমদার, রূপম ভট্টাচার্য, সমীরণ রায়, সুজন কৈরী, সনৎ নন্দী, অনিল সেন, অঘোর মণ্ডল, গণেশচন্দ্র হওলাদার, সুশান্ত সাহা, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, সুদীপ কুমার ঘোষ প্রমুখ।

আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন নরসিংদী, নওগাঁ, মানিকগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, নীলফামারী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, সচেতন হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদ্?যাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতি, মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, জগদ্বন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, জাগো হিন্দু পরিষদের জেলা ও শহর শাখা এসব কর্মসূচি পালন করে।

বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরের প্রতিমা বিনষ্টকারী বাবুল গ্রেফতার : নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার কেন্দ্রীয় হরিসভা মন্দিরের ১১টি প্রতিমা কুপিয়ে-খুঁচিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে বাবুল হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রাত ৯টার দিকে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামে বাবুলের ভাই সরোয়ার হাওলাদারের ঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন বানারীপাড়া থানার ওসি জিয়াউল আহসান। গ্রেফতারের পর তাকে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। বাবুল ওই গ্রামের মৃত হাকিম হাওলাদারের ছেলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর