শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
রাজনীতির হালচাল

সাংগঠনিক সফরে যাচ্ছেন নতুন কমিটির নেতারা

রফিকুল ইসলাম রনি

সাংগঠনিক সফরে যাচ্ছেন নতুন কমিটির নেতারা

সাংগঠনিক সফরে বের হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির নেতারা। আগামীকাল রবিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী ৮ নভেম্বর বিকালে গণভবনে দলের নতুন কমিটির প্রথম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হবে। ওইদিন সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। তবে এবার সাংগঠনিক সফরে তারকা নেতাদের ডিমান্ট বাড়তে পারে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। কারণ, হিসেবে তারা বলছেন, বিগত কমিটির তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত নতুন নেতারা এবার দলে ঠাঁই পেয়েছেন। দলীয় সূত্র মতে, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ জন্য এখন থেকেই দলকে আরও সুসংগঠিত করা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করে নেতা-কর্মীদের এক কাতারে নিয়ে আসতে চায় দলের হাইকমান্ড। সাংগঠনিক সফরের মাধ্যমে সরকারের বিশাল সাফল্য অর্জনের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের কর্মপন্থার আলোকে ‘ভিশন-২০২১’কে সামনে রেখে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করার লক্ষ্য এবং আগামী দিনে বর্তমান সরকারের কার্যকর পদক্ষেপসমূহ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে সংগঠনের সব স্তরের মতানৈক্য ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলে জামায়াত-বিএনপির সব অপকর্ম প্রতিহত করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়া সাংগঠনিক সফর কর্মসূচির মাধ্যমে বিগত দিনে জামায়াত-বিএনপি জোটের ক্রমাগত পরিকল্পিত হামলা, অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে মানুষের জানমালের ওপর হামলার ঘটনা তুলে ধরার পাশাপাশি বিগত প্রায় আট বছরে সরকারের উন্নয়নগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরে ব্যাপকভাবে জনমত গঠন করতে চায় দলটি। সে জন্যই নতুন কমিটির নেতারা সাংগঠনিক সফরে বের হবেন। দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জেলা-উপজেলা সম্মেলনের মাধ্যমে দল আগে যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হলেও সমপ্রতি সারাদেশে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, বিভক্তি বেড়েছে। নিজেদের মধ্যে একের পর এক সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এমপি-মন্ত্রীদের মধ্যে স্বেচ্ছাচারীদের প্রভাব বেড়েছে। দলীয় কর্মকান্ডে ত্যাগী রাজনীতিবিদদের অংশগ্রহণও কমে গেছে। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করেন দলটির হাইকমান্ড। জানা গেছে, দলের মধ্যে গেড়ে বসা সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করতে এবং ত্যাগীদের নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা নিয়ে সাংগঠনিক সফর শুরু হচ্ছে। আগামীকাল সকাল সাতটায় সংসদ ভবন থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা বাসযোগে টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী রবিবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নতুন কমিটির নেতারা। আগামী ৮ নভেম্বর গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সাংগঠনিক সফরের কর্মসূচি ও দলকে সুসংগঠিত করতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলকে আরো বেশি গতিশীল করতে খুব শিগগিরই সাংগঠনিক সফরে যাওয়া হবে। জেলায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত সাড়ে সাত বছরের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা হবে। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা উপজেলা-জেলা সম্মেলন শেষ করেছি। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দল বেশ শক্তিশালী। এখন সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় নেতারা সফরে যাবেন। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করে দেবেন। তারা যে দায়িত্ব দেবেন আমরা তা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করব।

সর্বশেষ খবর