সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শাহজালালে আনসার খুন

গুলি করে হামলাকারীকে আটক আহত আরও ৩, রেড অ্যালার্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

শাহজালালে আনসার খুন

আনসার খুনের পর শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালিয়েছে এক দুর্বৃত্ত। এতে এক আনসার সদস্য নিহত এবং আরও তিন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি করে ওই হামলাকারী যুবককে পাকড়াও করেছে। তার কাছ থেকে একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় পুরো বিমানবন্দরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রী সাধারণ প্রাণভয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। রেড অ্যালার্ট জারি করা হয় বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরের কার্যক্রম প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকে।

ঘটনার পর আহত নিরাপত্তারক্ষীদের কুর্মিটোলা  জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে এক আনসার সদস্য মারা যান। তার নাম সোহাগ আলী। আহত তিনজনকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এবং অন্যজন আনসার সদস্য। গুলিবিদ্ধ ওই হামলাকারীকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার নাম শিহাব বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর বিমানবন্দর সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দর এবং এর আশপাশ এলাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘিরে রাখে। পুলিশ ও র‌্যাব বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালায়। এপিবিএনের এএসপি তানজিনা আক্তার বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরে বিমানবন্দরে পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা এ কে ট্রেডার্সের এক কর্মী ছুরি নিয়ে বহির্গমন লাউঞ্জের তিন নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় আনসার সদস্যরা তাকে বাধা দিলে সে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ সময় অন্য আনসার সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালায় ওই যুবক। একে একে চারজনকে রক্তাক্ত করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে সে। এপিবিএন সদস্যরা সেখানে ছুটে যায়। তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, হামলাকারী ওই যুবক ছোরা হাতে হামলা চালালে এপিবিএন এবং আনসার সদস্যরা আহত হন। এ সময় এপিবিএনের সদস্যরা তাকে ধরতে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে হামলাকারী। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে পাকড়া করা হয়েছে। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, এ কে ট্রেডার্সের কর্মী শিহাব আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর সময় অন্য ক্লিনাররাও এগিয়ে এসে হামলা চালায়। এ সময় আনসার ও ক্লিনারদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম মিয়া বলেন, এক যুবকের হামলায় আনসারের চার সদস্য আহত হয়েছেন। পরে ওই যুবক গুলিতে আহত হয়ে ধরা পড়েছেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আনসার সদস্য সোহাগ আলী মারা যান। বিমানবন্দরে এপিবিএনের অধিনায়ক রাশেদুল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বলেন, ছুরিকাঘাতে দুজন আনসার ও দুজন এপিবিএন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এপিবিএনের দুই সদস্য হলেন ইশতিয়াক ও আশিক। গুরুতর আহত আনসার সদস্য সোহাগ আলীর মৃত্যুর খবর রাত ৯টার দিকে নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর আনসারের উত্তর জোনের অধিনায়ক ইব্রাহিম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আহত অন্য আনসার সদস্য এপিসি জিয়াকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থাও গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা বিভাগের এক পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সন্ধ্যার পর ওই যুবক ঢুকে প্রথমে বহির্গমন ফটকে এক আনসার সদস্যের পেটে ছুরি চালায়, এরপর এক এপিবিএন সদস্যের মাথায় আঘাত করে ফটক দিয়ে ঢুকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী আরেকজন বলেন, হলুদ টি-শার্ট ও সাদা প্যান্ট পরা ওই যুবক ৩ নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকে ছুরি হাতে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। প্রথমে সবাই হকচকিয়ে গেলেও পরে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে ধরে ফেলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর