বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধর্মান্ধতা প্রতিহত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্মান্ধতা প্রতিহত করতে হবে

আবদুল গাফ্‌ফর চৌধুরী

দেশ থেকে সন্ত্রাস, ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদ প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন অমর একুশে গানের রচয়িতা ও ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় উৎসবের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান তিনি। ‘ঐক্য গড়ো বাংলাদেশ, সাম্প্রদায়িকতা হবে শেষ’ স্লোগানে রাজধানীর নয়টি স্থানে এ উৎসবের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘এখানে যারা মোল্লাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যারা এখানে ধর্মের নামে ধর্মের বিকৃতি ঘটায়, তাদের আমরা যেদিন উচ্ছেদ করতে পারব, সেদিন হবে আমাদের চূড়ান্ত বিজয় দিবস। সেদিন আমি হয়তো থাকব না, আপনারা থাকবেন। আপনাদের কাছে আমাদের এই উত্তরাধিকার রইল, আপনারা এই বাংলাদেশকে কিছুতেই আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তান হতে দেবেন না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজয় ১৯৭৫ সালে ছিনতাই হয়েছে। লাখো শহীদের রক্ত আর মায়ের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কেনা বিজয় মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা একবার নয়, কয়েকবার ছিনতাই করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিজয় ছিনতাই পর্বটি বিস্তৃতি লাভ করে।’ মুক্তিযোদ্ধা গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, বিজয় পেতে ৩০ লাখ মানুষকে রক্ত দিতে হয়েছে, ৪ লাখ বীরাঙ্গনাকে সম্ভ্রম দিতে হয়েছে। অপহূত বিজয়কে উদ্ধার করার জন্য এ দেশের ছাত্র-জনতা যখন উঠে দাঁড়িয়েছে, তখন এদের বিপথগামী করার অনেক চেষ্টা হয়েছে। এদের হলিউডি-বলিউডি অপসংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে। অর্থনৈতিক সংগ্রাম ও রাজনৈতিক সংগ্রামকে একীভূত করার প্রস্তাবনা দিয়ে ধর্মান্ধতার গ্রাস থেকে তরুণ প্রজন্মকে মুক্ত করতে বড় সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বহু ধাক্কা দেওয়া হয়েছে কিন্তু দেশকে তালেবান রাষ্ট্র করা সম্ভব হয়নি। তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হয়নি। আমি শহীদ মিনার গড়তে দেখেছি, ভাঙতে দেখেছি। আবার এর অভ্যুত্থান দেখেছি। কত লুকোচুরি খেলা হয়েছে একে নিয়ে। কিন্তু শহীদ মিনার সব চক্রান্তকে ব্যর্থ করে এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস। জোটের সাধারণ সম্পাদক ও উৎসব পর্ষদের সচিব হাসান আরিফসহ অন্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন। কাল ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে বিজয় উৎসব। এ ছাড়া রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রবীন্দ্রসরোবর, বাহাদুর শাহ পার্কসহ নয়টি মঞ্চে উৎসব চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর