ঢাকা-পায়রা বন্দর রেললাইন নির্মাণে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি ডিপি রেল লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই নতুন রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রেললাইন নির্মাণের ফলে পায়রা বন্দর দিয়ে পরিবাহিত আমদানি-রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার রেলযোগে ঢাকাসহ সারা দেশে পরিবহন সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। রেলওয়ে খাতের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বরিশাল বিভাগ প্রথমবারের মতো রেল সংযোগের আওতায় আসবে। গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে মালামাল পরিবহনের মাধ্যমে এই লাইনটি তখন দেশের রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। গতকাল রেল ভবনে ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ছিলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য ঢাকা-পায়রা বন্দর রেললাইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা দেখে বিশ্বের অনেক দেশ ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বলছেন, ‘ফলো বাংলাদেশ, ফলো শেখ হাসিনা’। মন্ত্রী বলেন, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই রেল খাতসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। ঢাকা-পায়রা বন্দর রেললাইন নির্মাণে রেলওয়ে ও যুক্তরাজ্যের ডিপি রেল লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) কাজী মো. রফিকুল আলম এবং ডিপি রেল লিমিটেডের পক্ষে প্রধান নির্বাহী ইয়ান এস ডার্বিশায়ার। রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত মোট ২৪০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করবে ব্রিটিশ কোম্পানি ডিপি রেল লি.। এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানি নকশা প্রণয়ন, অর্থায়ন, লাইন নির্মাণ ও অপারেশনের দায়িত্ব পালন করবে। নির্মাণ কাজে সহযোগিতা করবে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশন। এ লাইন নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ সাল নাগাদ এর কাজ শেষ হয়ে কনটেইনার ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ২০ লাখ একক ইউনিট কনটেইনার পরিবহন সম্ভব হবে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে খুবই শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুই দেশের একই লক্ষ্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ এক ও অভিন্ন। এ দেশের উন্নয়ন অভাবনীয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার এলিসন ব্লেক, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
