শিরোনাম
বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পর্যবেক্ষণে দুই নেত্রী

আওয়ামী লীগ-বিএনপি যা বলল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন (নাসিক) পর্যবেক্ষণ করছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এ নির্বাচনকে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের ‘এসিড টেস্ট’ হিসেবে নিয়েছে। দুই দলের হেভিওয়েট নেতারাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় ঘাম ঝরিয়েছেন। তাদের সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন দুই নেত্রী।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ নাসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন। আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আছেন তার দলের প্রার্থীর পক্ষে সমন্বয়কের দায়িত্বে। তারা সার্বক্ষণিক দলের প্রধানসহ সিনিয়র নেতা ও নারায়ণগঞ্জ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। মাঠেও ছিলেন প্রচারের শেষ সময় পর্যন্ত। রবিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন  দলীয় মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ সময় নির্বাচনের নানা বিষয় নিয়ে তারা কথা বলেন। সোমবার নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশে এক বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বিবৃতিতে তিনি দলের প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে সাখাওয়াত হোসেন খানকে বিজয়ী করতে অনুরোধ জানান। এই বিবৃতি নারায়ণগঞ্জ বিএনপি প্রচারপত্র হিসেবে গতকাল বিতরণ করেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে কাজী জাফরউল্লাহ ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ নেতারা গত কয়েক দিন নারায়ণগঞ্জ চষে বেরিয়েছেন। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দুই শতাধিক নেতা নারায়ণগঞ্জের অলিগলিতে চষে বেরিয়েছেন। জানা যায়, গণভবনে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গুলশানের নিজ বাসায় বসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবেন। আওয়ামী লীগ ধানমন্ডির সভানেত্রীর কার্যালয় এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় নেতারা নির্বাচন প্রক্রিয়া নজরে    রাখবেন।

দলীয় সূত্র মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে দুই দল মর্যাদার লড়াই হিসেবে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে। অতীতের নির্বাচনগুলোতে এত গুরুত্ব দেখায়নি কোনো দল। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সব দলের প্রার্থীরাই পুরো প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। দলীয় কার্যালয়ে বসে আমরা নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সার্বিক খোঁজখবর রাখব। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের উন্নয়ন, দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত এবং প্রার্থীর জনপ্রিয়তার কারণে নৌকাই জয়লাভ করবে।  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণ শঙ্কামুক্ত ভোট দিতে পারলে অন্তত ৫০ হাজার ভোটে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হবেন। এখনো শঙ্কা কাটেনি। বিদায় বেলায় নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, আর নিজেদের গায়ে কালিমা লেপন করবেন না।

তিন কারণে আইভীর জয় হবে : প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, উন্নয়নের জোয়ার আর সাংগঠনিক শক্তি এ তিনের সমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বিজয়ী হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ইলেকশন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হলে নৌকাই বিজয়ী হবে। নারায়ণগঞ্জে আমাদের তিনটি বিষয় রয়েছে— তা হলো আমাদের প্রার্থী জনপ্রিয়, দ্বিতীয়ত সেখানে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের জোয়ার আছে আর আমাদের সাংগঠনিক শক্তি।

অরাজকতার আশঙ্কা বিএনপির : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে বিএনপি। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে গতকাল দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ বলেন, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে পক্ষপাতমূলক আচরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না, আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে।

ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত তিন শতাধিক সন্ত্রাসী এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা চষে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই তারা সেখানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর