দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি ওই বিশেষ দিনটি ঘিরে বিরোধীরা যাতে কোনো সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকবেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সব মহানগরী, জেলা-উপজেলায় শোভাযাত্রা ও সভা-সমাবেশের আয়োজন করবে ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোট। এ নিয়ে দলের ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি চলছে। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন এমন তথ্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের সহিংস তাণ্ডবের মধ্য দিয়েও অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন আর পেট্রলবোমায় মানুষ মারার পৈশাচিক বর্বরতার মধ্যেও সংবিধান রক্ষার ধারাবাহিকতায় নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট সরকার। এর পর থেকেই প্রতিবছর দিনটিকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে এবারও রাজধানীতে শোডাউন করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। সারা দেশের ৩০০ নির্বাচনী এলাকাতেই ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টায় একযোগে আনন্দ মিছিল, বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা ও সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে দলটি।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করার বিকল্প ছিল না। অন্যান্যবারের মতো আমরা এবারও কর্মসূচি পালন করব।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তি সামনে রেখে যাতে বিরোধী জোট কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সে লক্ষ্যে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া ওই দিন দেশব্যাপী আনন্দ মিছিলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল নারকীয় সহিংসতা এবং মানুষ হত্যার ঘটনা ভিডিও, পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হবে।এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচন করার ফলেই দেশে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য মোকাবিলা করে সেদিন নির্বাচন না করলে দেশে গণতন্ত্রের শূন্যতা সৃষ্টি হতো। কাজেই দিনটিকে আমরা বিশেষভাবে মযার্দাপূর্ণভাবে ঢাকাসহ সারা দেশে পালন করব। এতে নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে।’
সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতো। অনেকে বলে থাকে, দেশে গৃহযুদ্ধের মতো অবস্থার সৃষ্টি হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শত বাধা অতিক্রম করে দৃঢ় সাহসিকতার সঙ্গে নির্বাচন করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছেন। এ জন্য দিনটিকে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে। তবে এখনো কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়নি। দলীয় ফোরামে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘সরকারের বর্ষপূর্তির দিনে আমরা গত সাত বছরে সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরব।’