আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গতকাল (৩০ জানুয়ারি) একশ দিন পার করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর দায়িত্ব নিয়ে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘রাস্তায় গিয়ে সংগঠন দেখব আর সংগঠন দেখতে গিয়ে রাস্তা দেখব। তিন মাসের মধ্যে সংগঠনকে একটি শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনা হবে।’ তিন মাস পেরিয়ে একশ দিন শেষে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র তার সেই ঘোষণার সঙ্গে কথা ও কাজের মিল খুঁজছে। সাধারণ সম্পাদক প্রথম একশ দিনে কতটুকু সফল আর কতটুকুই বা ব্যর্থ তা নিয়ে চলছে দলের ভিতরে-বাইরে নানান বিচার বিশ্লেষণ। গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। এরই মধ্যে ২২টি জেলা সাংগঠনিক সফর করেছেন দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির নতুন সাধারণ সম্পাদক। দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে এসেছেন শৃঙ্খলা। নানা অভিযোগ ওঠায় সাতজন দলীয় এমপিকে ডেকে সতর্ক করেছেন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মতো বৃহত্তম দল পরিচালনায় দক্ষ সংগঠকের পরিচয় দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পর এ পর্যন্ত সাতটি জাতীয় দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব দিবসের দলীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও ওবায়দুল কাদের কোনো বক্তব্য দেননি। কারণ এতে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতার জন্য বেশি সময় পাবেন। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রায় ভুলেই যেতে বসেছিল। গত ১০ জানুয়ারি জাতির জনকের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দুই দিন রাজধানীর নিউমার্কেট ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন ওবায়দুল কাদের। দলের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতে, একশ দিনে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কী কেন্দ্র কী তৃণমূল সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরে সন্তুষ্ট। তিনি সরাসরি নেতা-কর্মীদের ফোন রিসিভ করে সাংগঠনিক বিষয়ে তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বিকালে নিয়মিত বসছেন ধানমন্ডির সভানেত্রীর কার্যালয়ে। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম পরীক্ষা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করা। ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বিজয়ী হন। গত একশ দিনে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ কতটা করতে পেরেছেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার সফলতা-ব্যর্থতা বিচারের দায়ভার দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৃণমূলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীর। নেত্রী আমার কাজের অনুপ্রেরণা। তিনিই আমার রাজনীতির শিক্ষক ও অভিভাবক। তার কাছ থেকে প্রতিদিনই শিখছি। তিনি আমার পরিশ্রমের মূল্য দিয়েছেন। আমার রাজনৈতিক জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছি, দুর্যোগের অমাবস্যা পার করেছি। জেল খেটেছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার একটা কমিটমেন্ট আছে, সেটা হলো আমাকে কোনো কাজে লাগালে সেখানে লেগে থাকি। নেত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন দলকে ঢেলে সাজানোর। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। আমি যা কিছু করি সব নেত্রীর নির্দেশে।’