মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আগামীতে প্রতিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে

—শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে আর কেউ ‘ছিনিমিনি’ খেলতে পারবে না। আমাদের লক্ষ্য নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে। জনগণ ভোট দিয়েছে, ফলাফল পেয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে প্রতিটি নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ তাদের ইচ্ছেমতো ভোট দেবে; যাকে চাইবে তাকে ভোট দেবে। আমরা চাই, জনগণ ভোট দেবে, তাদের প্রতিনিধি তারাই ঠিক করবে। এটা সম্পূর্ণ তাদের বিষয়। গতকাল রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতাসীন হওয়ার পর রাজনৈতিক নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখনই মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শাসনামলের তুলনা করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ বিবেচনা করবে, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময় কেমন ছিল। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কেমন আছে। মানুষ শান্তি চায়, নাকি অশান্তি বেগমের অশান্তি চায়; এটা মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের কল্যাণ কতটুকু করতে পারলাম; জনগণ তা বিবেচনা করবে। তিনি বলেন, আমরা নাম দেব কি দেব না— সেটাই আজকের মূল আলোচনার বিষয়। কারণ, আমরা চাই না ’৭৫-এর পর বাংলাদেশে যেই অন্ধকার যুগ ছিল সেই যুগ যেন আর ফিরে না আসে। কারণ, আমরা দেখেছি এই বিএনপি-জামায়াত যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।

প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালে বিএনপি- জামায়াতের সন্ত্রাসের বর্ণনা তুলে ধরতে গিয়ে মসজিদে কোরআন শরিফ পোড়ানো, ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা করায় নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনয়নে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার। জনগণ ভোট দিয়ে নিজেরাই তাদের প্রতিনিধি ঠিক করবে। এটা তাদের বিষয়।

শেখ হাসিনা জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আশা করি জনগণ এটা নিশ্চই বিবেচনা করে দেখবে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশে যখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের অবস্থা কেমন ছিল। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আজকে তারা কেমন আছে। তাদের খাদ্যের কোনো অভাব নেই। জীবনমান উন্নত হচ্ছে, গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সার্ভিস ও ঘরের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের আমলে মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে সরকারের সাফল্য, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মানুষ আজকে ভালো আছে, শান্তিতে আছে। তাদের বুঝতে হবে তারা এই শান্তি চায়— না অশান্তি চায়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের জন্যই রাজনীতি করি। জনগণের ভালো করাই আমাদের লক্ষ্য এবং আমরা সেটা করে যাব। তিনি বলেন, আমরা নিজেরা ভালো থাকতে আসিনি। জনগণকে ভালো রাখতে এসেছি। এটাই আমাদের রাজনীতির দর্শন। আমরা কতটুকু করতে পারলাম এটা জনগণই বিচার করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ সময় বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী করাসহ দেশের ইতিহাস বিকৃতি এবং দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, আমাদের (আওয়ামী লীগ) এবং তাদের রাজনীতির মধ্যে এটাই বিরাট তফাত। এটা মানুষকে বুঝতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে আজ শান্তির পথ বেছে নিতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান বাংলার মাটিতে কোনোদিন আর হবে না। আমরা দেশকে, দেশের মানুষকে শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি দিতে চাই। আলোর পথে নিয়ে যেতে চাই। সুন্দর জীবন দিতে চাই।

সর্বশেষ খবর