বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
বাগেরহাটে ট্রলারডুবি

চার নারীর লাশ উদ্ধার শিশুসহ নিখোঁজ ১৮

বাগেরহাট ও মোড়েলগঞ্জ প্রতিনিধি

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে গতকাল সকালে পানগুছি নদীতে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৪ মহিলার লাশ উদ্ধার হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে শিশুসহ অন্তত ১৮ যাত্রী। উদ্ধারকৃত লাশের মধ্যে রয়েছে, মোড়েলগঞ্জের কালিকাবাড়ির বিউটি বেগম (৩৮), একই উপজেলার গুয়াতলা এলাকার পিয়ারা বেগম (৫০), চিংড়াখালী এলাকার সুফিয়া বেগম (৭৩) ও  নাদিরা বেগম (৩৮)। এছাড়া মুমুর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে মোড়েলগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অফিসার রেবেকা বেগমসহ ৩ জনকে। সকাল সাড়ে ১১টায় দুর্ঘটনার পর থেকে পানগুছি নদীতে খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মমিনুর রশীদকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিকালে ডুবে যাওয়া ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি উদ্ধার হলেও নিখোঁজ ১৮ যাত্রীর সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের মোড়েলগঞ্জ ইউনিটের কর্মীরা। স্থানীয় এমপি ডা. মোজাম্মেল হেসেন ও জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস দুর্ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মোড়েলগঞ্জের ছোলমবাড়ীয়া খেয়াঘাট থেকে দুটি যাত্রীবাহী বাসের শতাধিক যাত্রী নিয়ে পুরাতন থানা ঘাটে যাবার পথে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি পানগুছি নদীতে ডুবে যায়। অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার কারণে ট্রলারটি  ডুবে যায় বলে আহত যাত্রীদের কাছ থেকে তারা জানতে পেরেছেন। দুর্ঘটনার সময় ৫০/৬০ জন যাত্রী সাঁতরিয়ে কিনারে উঠতে সক্ষম হয়। বাকি যাত্রীরা শ্রোতের তোড়ে হারিয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী ও মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল আলম জানান, ট্রলার ডুবির পর ৪ মহিলার লাশ উদ্ধার হয়েছে। এখনো ১৮ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে রয়েছে, মোড়েলগঞ্জের কাছিঘাটা গ্রামের হেলেনা বেগমের ৬ বছরের শিশু নাজমুল, ছোট জামুয়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম (৩৮), উত্তর ফুলহাতা গ্রামের হাসিব (৮), ছোটপড়ি গ্রামের নাসিমা আকতার (১৮), রায়েন্দা বাজারের আবির (১৭), বদনিভাঙ্গা গ্রামের বশির (২২), কাছিকাটা গ্রামের আব্দুল মজিদ শেখ, বরুজবাড়িয়া গ্রামের সুলতান আহমেদ (৬০), ভাইজোড়া গ্রামের খাদিজা (৪০), রাহাত (১০), আনছার হাওলাদার ( ৩৮), মোশার্রফ হাওলাদার (৫০), নাদিরা আক্তার (১৭), সালমা বেগম (৩০), শিশু সাজ্জাত (২) ও লাবনী আক্তার (৭)সহ ১৮ জন। ট্রলার যাত্রী চিকিৎসাধীন ফুলহাতা গ্রামের নাসিমা বেগম বলেন, ট্রলারটি প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। তীরে ওঠার কিছু আগেই ওই নদী দিয়ে যাওয়া পি-৩১২ নামের একটি জাহাজের ঢেউ ও সে াতের কারণে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে ৪ জনের লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত ও নিখোঁজ যাত্রী ও স্বজনদের আহাজারিতে নদীর দুই তীরে শোকার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর