শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

দিনভর গোলাগুলি বিস্ফোরণ

পুলিশ আহত, আস্তানায় বিস্ফোরক নিয়ে জঙ্গিরা । নিহতদের মধ্যে চার শিশু

শাহ্ দিদার আলম নবেল ও সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার থেকে

দিনভর গোলাগুলি বিস্ফোরণ

মৌলভীবাজারে অভিযানে আহত এক পুলিশ সদস্য —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মৌলভীবাজার পৌরসভার আবু শাহ দাখিল মাদ্রাসা গলির ভিতর অবস্থান দোতলা বাড়িটির। শক্তিশালী বিস্ফোরক নিয়ে বাড়িটির ভিতর অবস্থান ‘জঙ্গিদের’। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বাড়িটি ঘিরে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে সোয়াতের একটি দল। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’। দফায় দফায় গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে চলা শ্বাসরুদ্ধকর সে অভিযান শেষ হয়নি। আলোর স্বল্পতার কারণে স্থগিত করা হয়েছে অভিযান। সোয়াতের অভিযানে বাড়িটির ভিতর কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। অসমর্থিত সূত্রটি জানায়, নিহতের সংখ্যা চার বা পাঁচ হতে পারে। এর মধ্যে নারী ও শিশু থাকতে পারে। তবে এ ব্যাপারে অভিযানকারী সিটিটিসি বা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি। আজ নাসিরপুরের মতো সফলভাবে সোয়াত দল অভিযানটি শেষ করতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ নিয়ে গোটা এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে, মৌলভীবাজারের আরেক ‘জঙ্গি আস্তানা’ নাসিরপুরে নিহতদের ময়নাতদন্ত গতকাল সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় গতকাল অভিযান স্থগিত রাখা হয়। আজ সকালে আবহাওয়ার অবস্থা বুঝে ফের শুরু হবে সোয়াতের ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’। বড়হাটের ‘জঙ্গি আস্তানা’র অদূরে একটি বাড়িতে গতকাল প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। কাল (আজ) আবার শুরু হবে অভিযান।’ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযানের সময় বাড়ির ভিতর থেকে কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, ভিতরে প্রচুর বিস্ফোরক রয়েছে। এ অভিযান কিছুটা জটিল। ভিতরে কয়েকজন থাকতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে বাড়িটিতে জঙ্গিরা অবস্থান করছে, সে বাড়িতে বেশ কয়েকটি কক্ষ রয়েছে। বাড়ির ভিতর নির্মাণাধীন একটি ভবনও রয়েছে। এ কারণে অভিযান শেষ হতে কিছুটা সময় লাগছে।’ এদিকে, বড়হাটের জঙ্গি আস্তানায় সোয়াতের ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাসে’ কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। অসমর্থিত সূত্রটি জানায়, বাড়িটির ভিতর বিস্ফোরণে অন্তত চার বা পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। তবে সোয়াত সদস্যদের ছোড়া গুলিতে, না আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি সূত্রটি। তবে এ ব্যাপারে অভিযানকারী সিটিটিসি বা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি। সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম আজ সকাল থেকে পুনরায় অভিযানের কথা জানিয়েছেন।

যে কারণে অভিযানের নাম ম্যাক্সিমাস : মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে ‘জঙ্গি আস্তানা’য় অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন হিট-ব্যাক’। প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরবর্তী বড়হাটের আরেক আস্তানায় অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’। কেন এমন নাম— এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জটিলতার ব্যাপকতা বোঝাতে এই নাম দেওয়া হয়েছে।

দফায় দফায় গুলি-বিস্ফোরণ : বড়হাটের আবু শাহ দাখিল মাদ্রাসার গলির ভিতর অবস্থিত ‘জঙ্গি আস্তানা’ বাড়িটিতে গতকাল দফায় দফায় গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে সোয়াতের ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ শুরু হওয়ার পর থেকেই গুলি, বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ১১টায় বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ শোনা যায়। এ সময় বাড়ির ভিতর থেকে ধোঁয়াও বের হতে দেখা গেছে। এরপর কিছু সময় শান্ত থাকে পরিস্থিতি। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফের শুরু হয় গোলাগুলি। পৌনে ১টা পর্যন্ত তা চলে। দুপুর ১২টা ১৫, ১২টা ৩৫ ও ১২টা ৫০ মিনিটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় ওই ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে। এ তিন বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। এরপর আবারও কিছু সময় বিরতি দিয়ে বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা গোলাগুলি হয় বড়হাটে। সাড়ে ৪টার দিকে বিস্ফোরণে কাঁপে বড়হাট এলাকা। এ সময়ও ওই বাড়ি থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ছিল টানা গুলির শব্দও। এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে বড়হাটে।

জঙ্গি আস্তানা বাড়ির গ্লাস ‘বুলেটগ্রুফ’ : বড়হাটের জঙ্গি আস্তানা বাড়িটির জানালার গ্লাস ‘বুলেটগ্রুফ’ বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ধারণা। সোয়াত সদস্যদের ছোড়া গুলিতে বাড়ির জানালার কাচ ভাঙেনি। অভিযান চলাকালে আস্তানার বাইরে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ‘বড়হাটের বাড়ির জানালার গ্লাস শক্তিশালী কাচের তৈরি।’

পুলিশ কনস্টেবল আহত : বড়হাটে সোয়াতের অপারেশন ম্যাক্সিমাস চলাকালে কয়সর নামের এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাকে মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত। মৌলভীবাজার সদর থানার ওসি অকিল উদ্দিন বলেন, ‘অভিযানে অংশ নেওয়া একজন গুলি করার সময় খোসা ছিটকে গিয়ে কয়সরের গলায় আঘাত লাগে। এতে তার গলার চামড়া কেটে গিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’

নাসিরপুরে নিহতের মধ্যে চার শিশু : নাসিরপুরে ‘জঙ্গি আস্তানা’য় নিহতের মধ্যে চার শিশুর লাশ রয়েছে। মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পার্থ সারথি দত্ত বলেন, ‘ছিন্নভিন্ন লাশের যেসব অংশ হাসপাতালে এসেছে, তার মধ্যে একজনের বয়স কয়েক মাস। বাকি তিন শিশু ছিল ২, ৭ ও ১০ বছর বয়সী।’ তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে এক পুরুষের বয়স ৩৫ বছর, নারী দুজনের বয়স ২৫ ও ৩৫ বছর।

লাশের ময়নাতদন্ত : নাসিরপুরে সোয়াতে অভিযানে নিহতদের ময়নাতদন্ত গতকাল বিকাল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে শেষ হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সুব্রত কুমার রায়, জুনিয়র কনসালট্যান্ট আবু ইমরান ও আরএমও পলাশ রায়কে নিয়ে তিন সদস্যের বোর্ডও গঠন করা হয়েছিল। ময়ানতদন্তে নিহতদের শরীরে মোটা তারের টুকরোর মতো ধাতব বস্তু পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পার্থ সারথি দত্ত। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে তাদের ডিএনএ’র নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বহাল রয়েছে ১৪৪ ধারা : গত বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড, পাশের কুসুমবাগ ও খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ২ কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। টানা তৃতীয় দিনের মতো গতকালও তা বহাল ছিল। উৎসুক জনতাকে দূরে সরিয়ে রাখতেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

হেঁটে বিয়ে করতে গেলেন বর : বড়হাটের ছদর উদ্দিনের ছেলে আশিকুর রহমান শুকুরের বিয়ে ছিল গতকাল। কিন্তু এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় যান চলাচল ছিল বন্ধ। এ অবস্থায় প্রায় ২ কিলোমিটার হেঁটে বিয়ে করতে যান শুকুর। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সীমিতসংখ্যক বরযাত্রী।

উৎসুক মানুষের ভিড় : বড়হাট আস্তানায় সোয়াতের অভিযান চলছে শুনে সকাল থেকেই উৎসুক মানুষ ভিড় জমাতে থাকে। কিন্তু সিলেটের আতিয়া মহলের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বার বার পুলিশকে তাড়া করে ভিড় সরিয়ে দিতে দেখা গেছে।

বাড়ির মালিকদের মাঝে উদ্বেগ : মৌলভীবাজার শহরের সিংহভাগ বাড়ির মালিক প্রবাসে থাকেন। তাদের বাড়িগুলো ভাড়া দেন দেশে থাকা স্বজন বা কেয়ারটেকার। বড়হাটের দুই বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার পর বাড়ির মালিক প্রবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। দেশে থাকা স্বজনদের মাধ্যমে তারা ভাড়াটেদের তথ্য নিতে শুরু করেছেন।

শহরজুড়ে তল্লাশি : মৌলভীবাজার শহরে প্রবেশের প্রতিটি রাস্তায় বসানো হয়েছে তল্লাশি। এ ছাড়া শহরজুড়ে রয়েছে পুলিশের ভ্রাম্যমাণ দল। কাউকে সন্দেহ হলেই তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। তল্লাশি ছাড়া শহরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, তিন দিন রেকি করে মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাটে জঙ্গি আস্তানার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই সময় জেলার নাসিরপুরে আরেক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় তারা। সে আস্তানাও ঘিরে ফেলা হয়। বুধবার ভোরে উভয় আস্তানা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ওইদিন বিকালে নাসিরপুরে অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে আসে সোয়াতের একটি দল। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন হিট-ব্যাক’। এ অভিযানের শুরুতেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাসিরপুরের বাড়ির আস্তানায় থাকা সাতজন ‘আত্মহনন’ করেন বলে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম।

দুই বাড়ির মালিক কে এই সাইফুর : জঙ্গি আস্তানা হিসেবে গড়ে তোলা মৌলভীবাজারের বড়হাট ও নাসিরপুরের দুই বাড়ি ঘিরে এখন নানা প্রশ্ন। দুই বাড়ির মালিক সাইফুর রহমান, যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তিনিও এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

জানা গেছে, সপরিবারে যুক্তরাজ্যে থাকা এই সাইফুর মাঝেমধ্যে দেশে এলে হয় নিজের বড়হাটের বাড়িতে উঠতেন, নয় তো শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। বেড়াতে যেতেন নাসিরপুরের বাগানবাড়িতে। মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাটে সাইফুর রহমানের মালিকানাধীন একটি ডুপ্লেক্স ধাঁচের বাড়ি রয়েছে। এর প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামে বাংলো ধাঁচের একটি বাগানবাড়ি আছে। প্রায় এক একর জায়গার ওপর এ বাড়িটি গাছগাছালিতে ঘেরা। বাগানবাড়ি হিসেবে পরিচিত এ বাড়িটিই সাইফুর রহমানের পৈতৃক বাড়ি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বাড়ি দুটিকে ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে ঘিরে রাখে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় নাসিরপুরে ‘অপারেশন হিট-ব্যাক’ শুরু করে সোয়াত। অভিযানে চার শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছে। এদিকে বড়হাটে গতকাল সকাল থেকে ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ শুরু করেছে সোয়াত। সরেজমিনে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাইফুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। সেখানে তিনি ট্যাক্সিচালকের কাজ করেন। বাবার একমাত্র সন্তান হিসেবে নাসিরপুরের বাড়িটির মালিক তিনি। আর মৌলভীবাজারের পৌরশহরের বড়হাটে জায়গা কিনে পাঁচ-ছয় বছর আগে ডুপ্লেক্স বাড়ি করেন। সাইফুর রহমানের অবর্তমানে বাড়ি দুটির দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন তার মামাতো বোনের স্বামী জুয়েল আহমদ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেলাল আহমদ নামের এক ব্যক্তি বড়হাটের বাড়িটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার পরিচয় দিয়েছিলেন। প্রায় একই সময়ে নাসিরপুরের বাংলো ধাঁচের বাড়িটি কামরুল তালুকদার ইলিয়াস ওরফে মাহফুজ নামের এক ব্যক্তি ভাড়া নেন। মাসিক ৭ হাজার টাকায় ভাড়া নেওয়ার সময় নিজেকে তিনি একটি কোম্পানির ডিলার পরিচয় দিয়েছিলেন। বাড়িটিতে নিজের স্ত্রী, চার সন্তান, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলিয়ে আটজন থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় তারা যে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন, অভিযানের পর তা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। সাইফুর রহমানের নাসিরপুরের বাড়িটির তিনটি ভাগ রয়েছে। একটি ভাগে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জুয়েল আহমদের পরিবার, আরেকটিতে এক রিকশাওয়ালার পরিবার থাকে। অন্য ভাগে ছিল ‘জঙ্গিদের আস্তানা’। অভিযানের আগে বাকি দুই পরিবারের ১১ সদস্যকে নিরাপদে সরিয়ে নেয় পুলিশ। স্থানীয় খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজা মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাইফুর রহমানের বাবা আছদ্দর মিয়া। তিনি যুক্তরাজ্যে থাকতেন। পিতার অবস্থানের সূত্র ধরে সাইফুর রহমান যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। মাঝেমধ্যে দেশে এলে বড়হাটের বাসায় থাকতেন। সেখানে তার শ্বশুরবাড়িও। নাসিরপুরের বাগানবাড়িতে কখনোসখনো বেড়াতে আসতেন তিনি। সর্বশেষ বছরখানেক আগে পরিবার নিয়ে দেশে বেড়াতে এসেছিলেন সাইফুর রহমান।’ ‘সাইফুর রহমান এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত’ মন্তব্য করে চেয়ারম্যান রাজা মিয়া বলেন, ‘বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সাইফুর রহমান কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে। তার দুটি বাসা কীভাবে জঙ্গিরা ভাড়া নিল, তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর