শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আন্তরিকতার দৃষ্টান্ত বিমানবন্দরে মোদি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নয়াদিল্লি থেকে

রাজধানী দিল্লির লোককল্যাণ মার্গের বাড়ি থেকে গতকাল সকালে হঠাৎ বের হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যান্য দিনে তার জন্য বিশাল গাড়ির বহর থাকলেও গতকাল তা ছিল না। তার জন্য রাস্তাও বন্ধ করা হয়নি। সাধারণ ট্রাফিক চলাচলের রাস্তা ধরেই বিমানবন্দরের কাছাকাছি এয়ারফোর্স স্টেশনে গিয়ে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে গিয়ে একটি কক্ষে অবস্থান নেন। তখনো কেউ জানেন না আসলে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়েছিলেন এই বিশেষ বিমানবন্দরে। কূটনীতিকরা বলছেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিকতার অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গতকাল দুপুরে নয়াদিল্লির পালাম বিমানঘাঁটিতে পৌঁছালে এভাবেই চমক দেখিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের প্রটোকল অনুযায়ী ভারতের ভারী শিল্প, পাবলিক অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর কথা। তবে শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে যান। স্বাগত জানাতে সব প্রটোকল সরিয়ে রেখে বাড়তি নিরাপত্তা না নিয়ে মোদি বিমানবন্দরে হাজির হন। শেখ হাসিনা বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলে নরেন্দ্র মোদি তার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে করমর্দন করেন। শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয় লাল গালিচা অভ্যর্থনা। পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে এক টুইটে লিখেছেন, ‘একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর জন্য উষ্ণ অভ্যর্থনা।’ বাগলে বলছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার আন্তরিকতারই প্রকাশ ঘটিয়েছেন’। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কূটনীতিতে অনেক সময়ই বিশেষ ধরনের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। রাজনৈতিক শীর্ষ নেতারা তাদের ব্যক্তিগত অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটিয়ে থাকেন। এমনই একটি আন্তরিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নরেন্দ্র মোদি। পরে পালাম স্টেশন থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রাসহকারে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী সেখানে অবস্থান করবেন। শেখ হাসিনার হাতে ফুল তুলে দেওয়ার ছবি টুইট করে মোদি লিখেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পেরে তিনি আনন্দিত। পরে আরেক টুইটে মোদি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি সংকল্পবদ্ধ।’ গতকাল ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে শেখ হাসিনাও আশা প্রকাশ করেছেন, তার এই সফরের মধ্য দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সহযোগিতার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে বোয়িং আকাশ প্রদীপে করে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, তিন বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে বিদায় জানান।

সর্বশেষ খবর