রাশিয়া সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে ঢাকাকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ- রাশিয়ার অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ দমনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সন্ত্রাসবিরোধী আন্তর্জাতিক জোট গঠনের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, এর প্রয়োজনীয়তা বেড়েই চলেছে। আমরা আশা করছি, এ জোটে আমাদের সহযোগী দেশের সংখ্যা আরও বাড়বে এবং বাংলাদেশ হচ্ছে অবশ্যই সেসব দেশগুলোর একটি।’ গতকাল রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ইস্যুসহ সন্ত্রাসবাদ দমনে ঢাকা-মস্কোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে টেলিযোগাযোগ ও গণমাধ্যম সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও ইতার তাসের মধ্যে সহযোগিতা অন্যতম। এ সময় উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। পরে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ বিবৃতি দেন। লাভরভ বলেন, জাতিসংঘ ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মতো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফরমে পারস্পরিক সমন্বয় ও যোগাযোগ বজায় রাখতে দুই দেশ রাজি হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, সব ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রাখবে। এ সময় তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা বর্তমান রাশিয়ার ভূমিকা, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরকে মাইনমুক্ত করার কথাও উল্লেখ করেন। পরে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভকে বাংলাদেশ সফরে আসতে শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র সের্গেই লাভরভের কাছে পৌঁছে দেন মাহমুদ আলী। মস্কো সফরে আসায় মাহমুদ আলীকে ধন্যবাদ জানান লাভরভ। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিধি দলে তথ্য সচিব মর্তুজা আহমদ, জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শওকত আকবরসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন।
