বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

এক চিঠিতেই ঘুম হারাম ১৫ লাখ মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক চিঠিতেই ঘুম হারাম ১৫ লাখ মানুষের

ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতেই ঘুম হারাম হয়ে গেছে নগরীর ১৫ লাখ মানুষের। কারণ ভেঙে ফেলতে হবে শত শত আবাসিক, বাণিজ্যিক ও বহুতল ভবন! রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে নকশা অনুমোদন করিয়ে ১৯৯১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যারা ১০ তলা, ১২ তলা, এমনকি ১৫ তলা আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গড়ে তুলেছিলেন, তারা এখন দুই চোখে অন্ধকার দেখছেন। আর যারা নিজেরা অনেক কষ্ট করে ব্যাংক ঋণ নিয়ে নিজের জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ করে ফ্ল্যাট হিসেবে বিক্রি করেছেন, তাদেরও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কারণ এসব স্থাপনা ঘিরে ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করে এসব বাড়িঘর ও বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট, স্থাপনার খাজনা এবং নামজারি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। একই সঙ্গে সরকারের অতি উৎসাহী কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের ফলে নগরীর একাংশের ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে চাপা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জমির খাজনা দিতে পারছেন না নগরীর জোয়ার সাহারা, শাহজাদপুর, খিলক্ষেত, নূরের চালা, কুড়িল, ভাটারা, নয়ানগর, কালাচাঁদপুর, জগন্নাথপুর, নর্দা, কুড়াতলী ও বাড্ডার বাসিন্দারা। সিএস থেকে মহানগর ভূমি রেকর্ড, দখল, দলিল-পর্চা সবকিছু থাকার পরও নামজারিতে আপত্তি তোলা হচ্ছে। এসব এলাকার লোকজন রাজউক থেকে বাড়ির নকশা পাস করতে পারছেন না। জরুরি প্রয়োজনের সময় জমিজমাও বিক্রি করতে পারছেন না তারা। কঠিন এক সময় অতিক্রম করছেন এসব এলাকার লোকজন। ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা শামীম বানু শান্তি স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে সংশ্লিষ্ট এসি ল্যান্ড ও তহসিল অফিসকে এসব এলাকার জমিজমার খাজনা এবং নামজারি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০০০ সালের ১২ মার্চ ১১৭ স্মারকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রে ‘এসব এলাকার জমির খাজনা এবং নামজারির বিষয়ে আপত্তি করা হয়েছে। এ কারণে উক্ত এলাকার অধিগ্রহণকৃত জমির অবমুক্তকরণ গেজেট প্রকাশ না করা পর্যন্ত খাজনা কিংবা নামজারি কার্যক্রম করা যাবে না।’ বিভিন্ন সময় ঢাকা জেলা প্রশাসন থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অধিগ্রহণকৃত জমি অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ভূমি অবমুক্ত করার কোনো প্রক্রিয়া বিদ্যমান নেই। এ কারণে ক্যান্টনমেন্ট ও তেজগাঁও রাজস্ব সার্কেল এসব জমির নাজমারি এবং খাজনা নেওয়া বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় অনেকটা হঠাৎ করেই ঢাকা জেলা প্রশাসন চিঠি দিয়ে নামজারি ও খাজনা নেওয়া বন্ধ করে দেয়।

অথচ এটি অনেক আগেরই মীমাংসিত একটি বিষয়। বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা একাধিক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মীমাংসিত। অভিযোগ উঠেছে, মীমাংসিত এ বিষয় নিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বেআইনি হস্তক্ষেপ করছেন। তারা এক যৌথ প্রতিবেদনে অধিগ্রহণকৃত উল্লিখিত জমিজমা অবমুক্ত করার মতো নয় বলে মত দিয়েছেন। ১৭ মার্চ দেওয়া প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেন, আলোচ্য ভূমি রাজউক কর্তৃক চূড়ান্তভাবে অধিগ্রহণ করে সেখানে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ এবং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা যায়, ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অধিগ্রহণকৃত এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একটি মীমাংসিত বিষয় নিয়ে রাজউক ও জেলা প্রশাসকের এমন পদক্ষেপের কারণে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে। ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ লাখ মানুষ ১৯৮৯ সালের মতো আবারও রাজপথে নামতে পারেন। স্থানীয় লোকজন সর্বস্ব দিয়ে কেনা এবং বাপ-দাদার সম্পত্তি রক্ষার জন্য সংগঠিত হচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৫৬-৫৭ ও ১৯৬১-৬২ সালে দুটি এলএ কেস (ভূমি অধিগ্রহণ মামলা) থেকেই তাদের দুর্দশা শুরু। প্রয়োজন না হওয়ায় এলএ কেসের আওতাভুক্ত জমি সরকার অবমুক্ত করে দেয়। ওই জমি অবমুক্ত করে লাখ লাখ মানুষের দুর্দশা লাঘব করার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও সাহাবুদ্দীন আহমদ লিখিত নির্দেশও দেন। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাড্ডার জনসভায় অধিগ্রহণ তুলে নিয়ে ঘোষণা দেন, এখন থেকে বাড্ডা এলাকায় অধিগ্রহণ কিংবা উচ্ছেদের কোনো আতঙ্ক থাকবে না। এর পরও নানা অজুহাত পুঁজি করে কিছু সরকারি আমলা ও ডিসি অফিসের কর্মকর্তা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছেন। দুজন প্রেসিডেন্টের অর্ডারের পরও কীভাবে ওই জমি একোয়ারভুক্ত থাকে সেটাই এলাকাবাসী বুঝতে পারছেন না। একাধিক মন্ত্রী-এমপি বলেন, যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তারাই ওই জমির মালিক। অন্যায়ভাবে যারা বাড্ডাবাসীকে উচ্ছেদ করতে আসবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারের মাঠপর্যায়ের কতিপয় কর্মকর্তা একটি মৃত আইনকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৮৯ সালের দিকে সরকারের অন্যায় সিদ্ধান্তের কারণে অধিগ্রহণকৃত এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তখন পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়। পুলিশের গুলিতে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। গুলি চালিয়েও স্থানীয়দের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদ ঘটনাস্থলে এসে প্রথমে মৌখিকভাবে সমস্ত জমি অবমুক্তর ঘোষণা দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এক আদেশে তা কার্যকরের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ঢাকার ডিসি অফিসকে নির্দেশ দেন। ঢাকা জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তি সরকারের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৯৬৫ সালে তা অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি নোটিসের মাধ্যমে ওই বছর ১৫ অক্টোবরের মধ্যে উত্তোলিত ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তৎকালীন বিশেষ ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা নির্দেশ দিলে ভূমিমালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেন। ১৯৯২ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসক নিজামউদ্দিন আহমেদ ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দিয়ে অধিগ্রহণকৃত জমি ফেরত নেওয়ার জন্য ভূমি মালিকদের নোটিস দেন। ওই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে জমির মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেন। এর পরও কেন ওই জমি নিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা মাথা ঘামাচ্ছেন তা সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা জানেন না বলে জানান। প্রত্যাশিত সংস্থা হিসেবে যাদের মালিকানা দাবি করার কথা ছিল, তাদের কোনো তৎপরতা নেই।

রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ১৩৮ নম্বর এলএ কেসের প্রত্যাশী সংস্থা তৎকালীন ডিআইটি (ঢাকা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট) থেকে কখনো দাবি করা হয়নি অধিগ্রহণকৃত ১৩৮৫ একর জমি তাদের। বরং পূর্ত মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকার ডিসি অফিস থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ১৩৮৫ একর জমির মধ্যে ১২২৩ একর জমি অবমুক্ত করা হয়। মূলত জমির মালিকদের জানানোর জন্যই তা করা হয়েছিল। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তৎকালীন পূর্তমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি স্পষ্ট করে বলে, যেহেতু অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির কোনো গেজেট হয়নি সেহেতু তা গেজেট করে অবমুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই। হুকুমদখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও দখল গ্রহণের পর গেজেটভুক্ত সম্পত্তিই কেবল গেজেট করে অবমুক্ত করতে হয়। এ ছাড়া সরকারের নির্দেশে ভূমিমালিকরা তাদের গ্রহণকৃত ক্ষতিপূরণের টাকা ঢাকার ডিসি অফিসের এলএ শাখায় ফেরত দিয়েছেন। তাই এ ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা থাকার কথা নয়। এখন যা করা হচ্ছে তা মূলত জনগণকে হয়রানির জন্যই করা হচ্ছে।

প্রবীণ আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ বলেন, ‘অধিগ্রহণকৃত জমির টাকা ফেরত নেওয়ার পর সে জমি অধিগ্রহণের তালিকায় থাকা বেআইনি। কোনো মগের মুল্লুকে এ ধরনের অবিচার চলতে পারে না। প্রত্যাশিত সংস্থা রাজউক এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড লিখিতভাবে বলেছে, এসব সম্পত্তি তাদের নয়, সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসন কাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য খাজনা নেওয়া এবং নামজারি বন্ধ রেখেছে তা কারও বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগে তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’ একাধিক আইনজীবী বলেন, বিদ্যমান চারটি জরিপ অনুযায়ী এসব জমির দখলদার ও মালিক সাধারণ মানুষ। সিএস, এসএ, আরএস ও সিটি জরিপের ধারাবাহিকতায় তারা নামজারি এবং খাজনা প্রদান করেছেন। তাই ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা কিংবা এসি ল্যান্ড কোনো চিঠি দিয়ে নামজারি ও খাজনা নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারেন না। আর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এসি ল্যান্ড বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, একটি রেকর্ড গেজেটভুক্ত হয়ে গেলে রেকর্ডীয় মালিককেই বৈধ ধরে নিতে হবে। এর ফলে কার্যক্রমের জন্য আগের রেকর্ড বাতিল হয়ে যায়। এ ছাড়া মূল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু দাফতরিক চিঠির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা বেআইনি। নয়ানগরের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘একবার অধিগ্রহণকৃত জমি অবমুক্ত করার পর সে জমি পুনরায় অধিগ্রহণের কথা বলে তারা সাধারণ মানুষকে উসকে দিচ্ছে।’ জোয়ার সাহারার আদি বাসিন্দা নূর আলম বলেন, ‘১৩৮/৬১-৬২ নম্বর এলএ কেসে অধিগ্রহণকৃত জমি সরকার ১৯৬৫ সালের দিকেই অবমুক্ত করে দেয়। এ কারণে ওই জমি অধিগ্রহণের কোনো গেজেট ছাপা হয়নি। যে জমির গেজেট হয়নি তাকে অধিগ্রহণ বলা যাবে না। যার কোনো গেজেট হয়নি তার অবমুক্তির জন্যও কোনো গেজেট প্রয়োজন হয় না। সরকার তালিকা করে সংবাদপত্রের মাধ্যমে যে অবমুক্ত করেছিল, সেটাই সঠিক। ২০০০ সালের ১১৭ নম্বর স্মারকের পরিপত্রটি বাতিল করে দিলেই দীর্ঘমেয়াদি হয়রানি থেকে আমরা বেঁচে যাই।’ বাড্ডা, জোয়ার সাহারা ও ভাটারা এলাকার ভূমিমালিকরা জানান, জমি অধিগ্রহণ হলেও সে জমির সিএস, এসএ, আরএস ও সিটি জরিপের কোথাও সরকারের কোনো স্বার্থ নেই। এ কারণে ধারাবাহিক মালিকানার স্বার্থে ভূমিমালিকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে নামজারি করে খাজনা দিয়ে আসছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক ভূমিমালিক নিজ জমিতে ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। এদিকে রাজউক সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত এবং প্রতিষ্ঠানের নিষ্কণ্টক মালিকানা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে রাজউক তাদের প্রয়োজনীয় জমির তালিকা প্রকাশ করে ১৩৮ নম্বর এলএ কেসের সব সম্পত্তি ছেড়ে দেয়। সেই তালিকায় স্বাক্ষর করেন রাজউকের চেয়ারম্যান, মেম্বার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ল্যান্ড), পরিচালক (ভূমি), উপ-পরিচালক (ভূমি) এবং আরও অনেক কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, আধুনিক উপশহর গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন সরকার ১৯৬১-৬২ সালের দিকে ১৩৮ এলএ কেসের মাধ্যমে বাড্ডা, জোয়ার সাহারা, ভাটারা, লালসরাই, মহাখালী, সামাইর, ভোলা, সূতিভোলা এই আটটি মৌজার ২ হাজার ৭৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে কিছু এলাকার জমি রেখে অধিকাংশ জমিই সরকার অবমুক্ত করে দেয়।

জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘১৩৮ নম্বর এলএ কেসের সম্পত্তি নিয়ে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমরাও চাই এলাকার লোকজন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আগামী ৩ মে ভূমি মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি সবার মতামতের ভিত্তিতে সমাধান হবে।’

ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘এ কথা সত্যি, বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ১৩৮ এলএ কেস ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের আওতাধীন থাকায় অনেকেই খাজনা দিতে পারছেন না এবং নামজারিও করতে পারছেন না। এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্রের কারণে করতে হচ্ছে। অথচ রেকর্ডপত্র তাদের নামে রয়েছে। সেখানে বাড়িঘর তুলে তারা বসবাসও করছেন। বিষয়টি জনস্বার্থমূলকভাবেই দেখা হবে। ৩ মে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে সমস্যাটি সমাধান করা হবে।’

সর্বশেষ খবর