গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। এটি সমাজের অনেক ক্ষতি করছে। দুর্নীতির কারণে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। দুর্নীতির কারণে যে কাজটা পাওয়া উচিত সেই কাজটা আমরা পাচ্ছি না। দুর্নীতির কারণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। আমাদের শাসন ব্যবস্থার মধ্যে জবাবদিহিতার প্রয়োজন আছে, রাজনীতির মধ্যেও। গতকাল গণফোরাম আয়োজিত ‘দুর্যোগপূর্ণ হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ান’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। হাওরে সাম্প্রতিক অকালবন্যা ও মানুষের দুর্গতির বিষয়ে তিনি বলেন, হাওর এলাকায় যেসব কাজ হচ্ছে, এখানে দলীয় ভিত্তিতে যোগ্যতা যাচাই না করে যদি কাজ দেওয়া হয়, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে বাধ্য। তাদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলা হয়, কিছু সময় পার হওয়ার পর এটি ঝুলে যায়। কাজে পরিণত হয় না। কয়জনের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়? মূল যারা দায়ী থাকেন, তারা কিন্তু পার পেয়ে যান। তিনি আরও বলেন, এগুলো আইনের শাসনের দুর্বলতা। কেননা আইনের শাসন যদি কার্যকর থাকে, দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা যদি থাকে, তখন যে দুর্নীতি করবে, সে চিহ্নিত হবে, তার তদন্ত হবে, বিচার হবে, শাস্তি হবে। হাওরের দুর্ভোগ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নে ড. কামাল বলেন, এটি একটি জাতীয় সংকট। জাতীয় সংকট মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় ঐক্য। এটিকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না বিচার করে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ না করে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। সব তথ্য একত্র করা দরকার। গঠনমূলক প্রস্তাব সামনে আনা দরকার এবং এই মানসিকতা নিয়ে বলা দরকার— আসুন সবাই মিলে কীভাবে দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষকে বাঁচানো যায়। ওখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গঠনমূলক প্রস্তাবগুলো এনে কীভাবে সমন্বয় করে কাজ করা যায়, এ বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে। সবার নির্দিষ্ট কাজ আছে। সবাই সমন্বয় করে চলবে। একে অন্যের লক্ষ্যটা যেন অর্জন হয়, সে ব্যাপারে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। কোনো ব্যাপারে দ্বিমত থাকলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা ঐকমত্যে আসার চেষ্টা অবশ্যই করা উচিত। লিখিত বক্তব্যে ১০টি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে হাওরবেষ্টিত জেলাগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা এবং জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করার দাবি রয়েছে। সংবাদ সম্মলনে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য তবারক হোসেন। অন্যদের মধ্যে নির্বাহী সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান কামাল, সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।