বুধবার, ৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ নেই ৩২ জেলায়, নৌকা ডুবিতে পাঁচজনসহ মৃত্যু ১৫ জনের

প্রতিদিন ডেস্ক

কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড

কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। রবিবার বিকাল থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত ঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। পদ্মায় ডুবে গেছে যাত্রীবাহী নৌকা। চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায়। ২৯ ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। টাওয়ার ভেঙে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন ছিল অনেক জায়গা। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ— রাজশাহী : ঝড়ের কবলে পড়ে রাজশাহীতে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এর মধ্যে রবিবার পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন—দরগাপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলাম, আজহার উদ্দিনের ছেলে রবিন, বাঘা উপজেলার আসাদুল ইসলাম, পাঠানপাড়া এলাকার তামিম ইকবাল ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঝিকড়া গ্রামের আহাদ আলী। তামিম ও আহাদ দরগাপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার মক্তব বিভাগের শিক্ষার্থী। গতকাল সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দফতরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, ‘রবিবার রাত ১১টার দিকে আমরা শুনতে পাই পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এরপর রাতভর খোঁজাখুঁজি করা হয়। গতকাল ভোরে ঘটনাস্থল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে জাহাজঘাট এলাকায় তাদের লাশ ভেসে উঠতে দেখে লোকজন খবর দেয়। আমরা লাশ উদ্ধার করি। এদিকে গাছচাপায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন—সপুরা এলাকার ফরিদুল ইসলাম, বেলঘরিয়ার মুনছুর রহমান, শ্যামপুর গ্রামের আছিয়া বেগম (৪৫) ও কলাবাগান এলাকার আলম আলী মুন্সি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ : বজ পাতে শিবগঞ্জে দুই নারী ও গোমস্তাপুরে গাছচাপায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শিবগঞ্জ চকদৌলতপুর মহল্লার ছবি বেগম ও বিশ্বনাথপুর গ্রামের মাসুমা বেগম পাশের বাগানে আম কুড়াতে যান। এ সময় বজ পাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। একই সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে গোমস্তাপুরে গাছচাপায় আশাবুল হক আশা নামে এক পথচারী নিহত হন। এ ছাড়া ঝড়ে প্রায় তিন হাজার মণ আম ঝরে পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। অনেক বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। তবে তাত্ক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব দিতে পারেনি কৃষি বিভাগ। সুনামগঞ্জ : ঝড়ে একজন নিহত ও  ৮৪ জন আহত হয়েছেন। নিহত সুরমালা দাস সুনামগঞ্জ পৌরসভার মল্লিকপুর এলাকার মৃত সুখেন্দ্র দাসের স্ত্রী। এছাড়া সহস্রাধিক কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি ও অসংখ্য গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে এ ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। জনজীবনে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন অনেকেই। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের তথ্যমতে, জেলার নয়টি ইউনিয়নে দুই হাজার ৮৮৮টি কাঁচা ও আধপাকা স্থাপনা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট হাজার ৫২১টি ঘরবাড়ি। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, কালবৈশাখীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। ছাতক থেকে আসা বিডব্লিউডির মূল লাইনের (৩৩ কেভি) ১২টি খুঁটির ওপর গাছপালা পড়ার কারণে সেগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। শহরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সড়কের ওপর বিদ্যুতের তার পড়ে আছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ লাইনেরও। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পিডব্লিউডির সাতটি টিম কাজ করছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে আরও ২/৩ দিন লাগবে। সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি জানায়, ঝড়ে পল্লীবিদ্যুতের ৫০ থেকে ৬০টি পিলার হেলে পড়েছে। দুটি ভেঙে গেছে। ৫০টির মতো ক্রস আর্ত ভেঙে গেছে। অসংখ্য স্থাতে তার ছিঁড়ে পড়েছে।

কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে একজন নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বিধ্বস্ত হয়েছে বিদ্যুতের টাওয়ারসহ শতাধিক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সোমবার রাতে ভৈরবসহ আশপাশের এলাকায় প্রচণ্ড বেগে ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের তাণ্ডবে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ লাইনের বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গেছেন সম্ভুপুর এলাকায় বাবুল মিয়া নামের এক ব্যক্তি। এ ছাড়া পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকা-সিলেট ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে কমপক্ষে ১৫টি গাছ ভেঙে সড়কের ওপর পড়লে দীর্ঘক্ষণ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বগুড়া : শেরপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলায় ছিঁড়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে আবু হাশেম (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকালে উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে (যমুনা পাড়া) এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবু হাশেম ওই গ্রামের আতাহার আলীর ছেলে। স্থানীয়রা জানায়, রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঝড়ে উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের (যমুনাপাড়া) দশভাগ চালকলের সামনের বৈদ্যুতিক খুঁটির তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। মিল মালিক হাজি মোসলেম বিদ্যুৎ অফিসের জরুরি বিভাগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ফোন করে ঘটনাটি জানান। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যানরা গিয়ে তার সংস্কারের জন্য টাকা চাইলে মিল মালিক তা দিতে অস্বীকার করেন। বিকালে আবু হাশেম নামের ওই শিশু সেখানে খেলাধুলা করতে গেলে ৩৩ কেভির লাইনের তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : টানা ২৯ ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। ঝড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার না পেয়ে হয়ে ওঠেন ক্ষুব্ধও। এদের মধ্যে কোথাও কোথাও বিক্ষোভও হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন হলে পানি ও খাবার সংকট দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষার্থীরা। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এক সময় থালা-বাটি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ২৯ ঘণ্টা পর সোমবার রাত ১২টায় ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়। রংপুর : টানা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় স্থবির হয়ে পড়ে রংপুরের জনজীবন। থেমে যায় কল-কারখানার চাকা। বিঘ্নিত হয় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। অচল হয়ে পড়ে পেট্রল পাম্পগুলো। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানিজ অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) রংপুর আঞ্চলিক অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী জানান, সোমবার রাতে ভৈরবে ১ লাখ ৩২ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ে। সেটি মেরামত কাজের জন্য গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিদ্যুতের অভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের হাঁসফাঁস অবস্থা সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা। নাটোর : সদর, নলডাঙ্গা, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলায় অর্ধ শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত এবং শত শত গাছ ভেঙে পড়েছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন স্থানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। রবিবার রাতে কালবৈশাখীতে সদরের তেবাড়িয়া, কাফুড়িয়া ও ছাতনী ইউনিয়নে মসজিদসহ অর্ধ শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এ ছাড়া বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। সদর, নলডাঙ্গা, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলায় শত শত গাছ ভেঙে পড়েছে।

উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় : ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুতের একটি সঞ্চালন লাইন মেরামত করতে গিয়ে গতকাল সকালে আরেকটি লাইনে বিভ্রাট দেখা দিলে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের ৩২টি জেলার মানুষ সোমবার থেকে মঙ্গলবার কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন থাকেন। এতে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের দুই হাজার ২৪৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ২৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র অচল হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ভারতের বিদ্যুৎ আমদানিও তবে গতকাল দুপুরের পর থেকে একে একে জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (পিডিবি) সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ২-১টি ছাড়া প্রায় সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ জানতে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পিজিসিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঈশ্বরদী-ঘোড়াশাল ২৩০ কেভি জাতীয় গ্রিড বিকল হয়ে পড়ে। এর আগে সোমবার ঝড়ে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি জাতীয় গ্রিড বিকল হয়। এক সঙ্গে দুুটি গ্রিড বিকল থাকায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ ছিল না। এর আগে সোমবার ঝড়ে ভৈরবে মেঘনা নদীর ওপর ২৩০ কেভি ক্ষমতা সম্পন্ন রিভার ক্রসিং টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়। এতে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রাত ৮টায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখন পুরো দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের দুই-একটি ছাড়া প্রায় সব বিদ্যুেকন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। গতকাল বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইন ট্রিপ করলে দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশের জেলাগুলো বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়ে। জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাঠানোর জন্য দুটি ২৩০ কেভির লাইন আছে। এর একটি আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে অন্যটি ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদীতে। ঝড়ে আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জের লাইনের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদীতে লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওভারলোডের কারণে এই লাইনটি ট্রিপ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য সেই এলাকার সব বিদ্যুেকন্দ্রও বন্ধ হয়ে যায়। পিডিবির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। ২-১টি ছাড়া প্রায় সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস সাজ্জাদুর রহমান জানান, ঝড়ে সোমবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কালীপুরে একটি বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙে পড়ে ২৩০ কিলোভল্টের সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২৩০ কেভি লাইন হাই ভল্টেজ সঞ্চালন লাইনের মধ্যে পড়ে। সারা দেশে পিজিসিবির ৩ হাজার ১৮৫ সার্কিট কিমি. ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন আছে। 

পিজিসিবি সূত্র জানায়, ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইনে গতকাল সকালে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিভ্রাট দেখা দেয়। এজন্য পিজিসিবির রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এসব এলাকার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বন্ধ থাকে। এ সময় এলাকাভেদে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।  পিডিবি সূত্র জানায়, সঞ্চালন লাইন বন্ধ থাকায় অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি। লাইন বিপর্যয়ের কারণে ময়মনসিংহ থেকে ত্রিশাল ভৈরব থেকে দুলিয়ারচর, সুনামগঞ্জ থেকে দিরাই ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বন্ধ হয়ে যায়। পিডিবির তথ্যে,  খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে দুই হাজার ২৪৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ২৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। সোমবার এসব কেন্দ্রে এক হাজার ৮৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল এসব এলাকা ছাড়াও ঢাকা ও তার আশপাশেও বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর