বুধবার, ৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন

বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ বাংলাদেশে

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, স্বাধীন মত প্রকাশের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার বাক স্বাধীনতা খর্ব করতে খড়্গহস্ত। সংস্থাটি বাংলাদেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই দাবি করে। ইস্ট লন্ডনের একটি হোটেলে এই প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অ্যামনেস্টির কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ব্লগার সিনথিয়া আরেফিনও ছিলেন। খবর বিডিনিউজের। ‘ভয় আর দমন-পীড়নের ফাঁদে বাংলাদেশে বিরুদ্ধমত’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনের মূল সুর হচ্ছে, জঙ্গিদের হামলা আর হুমকির ভয়ে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ বাংলাদেশে কমে এসেছে। সরকার তাদের সুরক্ষা দেওয়ার বদলে উল্টো নানা কৌশল ও আইনের বেড়াজালে বাক স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করে চলেছে। এই দুই মিলিয়ে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন অনেক সংকুচিত বলে উপসংহার টেনেছেন অ্যামনেস্টির বাংলাদেশবিষয়ক গবেষক ওলফ ব্লোমকভিস্ট। হামলা ও হুমকির মুখে পড়া ব্লগার, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার বদলে তাদের দায়ী করে বাংলাদেশ সরকার উল্টো অপরাধীদের মদদ জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে অ্যামনেস্টি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হলেও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশে এক ধরনের স্বাধীনতা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। তারা বেশ কয়েকটি বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জঙ্গি হামলা কিংবা হুমকির মুখে পড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে নিরাপত্তা চেয়েও না পাওয়ার কথা অ্যামনেস্টিকে বলেছেন ব্লগাররা, যাদের কেউ কেউ নিরাপত্তার স্বার্থে দেশ ছাড়ার কথাও জানিয়েছেন। অ্যামনেস্টি দাবি করেছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গণমাধ্যমে তার সমালোচনা ঠেকাতে নানা হস্তক্ষেপের পাশাপাশি কালাকানুনও ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা ‘সীমা’র বাইরে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের কাউকে নিয়ে কোনো সমালোচনায় সাহসী হচ্ছেন না। এর উদাহরণ হিসেবে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলার কথা উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি। শফিক রেহমানকে বন্দী করার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি, যিনি শেখ হাসিনাপুত্র জয়কে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। অ্যামনেস্টি বলছে, বাংলাদেশ সরকার এখনো পুরনো ঔপনিবেশিক আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে সাংবাদিকদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সমালোচনা বন্ধ করতে বিতর্কিত তথ্যপ্রযুক্তি আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগেও উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। ব্লোমকভিস্ট বলেন, ‘বাংলাদেশে এই দমন-পীড়ন অবশ্যই বন্ধ হতে হবে।’

প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যারা হুমকির সম্মুখীন, তাদের নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। এরপর নিবর্তনমূলক আইনগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছে তারা।

সর্বশেষ খবর