শিরোনাম
সোমবার, ৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভালো কাজের প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে : জয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভালো কাজের প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে : জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, কেবল উন্নয়ন করলেই মানুষ ভোট দেবে এটা ভেবে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। এখন প্রচারের যুগ। ভালো কাজের প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে।

গতকাল সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি সরকারবিরোধী অপপ্রচারের জবাব দিতে নিজেদের প্রচার চালানোর জন্য আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ আয়োজিত এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পুরো কর্মশালায় সহযোগিতা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (সিআরআই)।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, পঁচাত্তরের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও এই অপ্রপচার দেখেছি। এত কাজ করার পরও সরকারকে অপপ্রচার সহ্য করতে হয়। সুতরাং কেবল কাজ করলে হবে না। এই অপপ্রচার মোকাবিলার জন্য আমাদেরও প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। মানুষের জন্য কী কাজ করা হয়েছে তার প্রচার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহযোগিতা নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, কেবল মানুষের কাছে শুনেই নয়, আমরা জরিপ করেও যেটা দেখি তা হচ্ছে, আমাদের তরুণরা খবরের কাগজ খুব একটা পড়েন না। এটা অবশ্য একদিক দিয়ে ভালো। কেননা খবরের কাগজে আমাদের ‘সুশীল বাবুদের’ মতামতই কেবল দেখা যায়। আমাদের তরুণরা ওসব পড়েই না, পাত্তা দেয় না। তরুণরা টিভি দেখে। তবে সবচেয়ে বেশি খবর তারা পায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে। সে কারণেই আমাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমরা দেশের জন্য কাজ করছি। এসব যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা তুলে ধরতে পারি, তাহলে কেবল আজকের ভোটাররা নয়, ভবিষ্যতের ভোটাররাও আওয়ামী লীগের ভোটার হয়ে থাকবে।      

দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় বলেন, সিনিয়রদের অনেকে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা করতে চান না। সৎ মানুষ নিজেদের ঢোল কিংবা প্রচার-প্রচারণা করতে লজ্জা পান। তবে লজ্জা পেলে হবে না, প্রচার করতে হবে। প্রতিদিন সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পারলে রোজ একটা করে পোস্ট দেবেন। দিনে দুই-তিনটা করেও দিতে পারেন। আমরা যেগুলো পোস্ট দেব, সেগুলো শেয়ার করেন। এগুলো কিন্তু ভাইরাল হয়ে যায়। আর অ্যাকাউন্ট কীভাবে ভেরিফায়েড করাতে হয় তা এমপিদের শিখিয়ে দেওয়া হবে। তখন ওই অ্যাকাউন্ট অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, ‘জানি, টেকনোলজি ব্যবহার করা অনেকের জন্য মাঝেমধ্যে একটু কঠিন হয়। আপনারা চেষ্টা করবেন, আপনাদের যতটুকু সম্ভব আমরা সহযোগিতা করব। আর আপনারা যদি কমফোর্টেবল ফিল (স্বস্তি বোধ) না করেন, যদি সাহস না পান, আমি অনুরোধ করব, একজন পিএস (ব্যক্তিগত সচিব) দিয়ে দেন। যার কাজ থাকবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘যারা জুনিয়র তারা এটাতে অভ্যস্ত। আমার চেয়েও বেশি ওস্তাদ। পলকের (তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী) সঙ্গে তো পারিই না। ও দিনে যে পরিমাণ ফেসবুকে পোস্ট দেয়, ওর সঙ্গে কেউ কুলিয়ে উঠতে পারে না।’ চলমান পদ্মা সেতু নির্মাণযজ্ঞ দেখতে যাবেন জানিয়ে জয় বলেন, কেবল কাজ করলে হবে না। মানুষকে জানিয়ে দিতে হবে, আমরা তাদের জন্য কী করছি। বিদ্যুেকন্দ্র নিজে নিজে নির্মিত হয় না। পদ্মা সেতুও এমনিতেই তৈরি হয়ে যায় না। এগুলো বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তে হচ্ছে। আমরা এর টাকা জোগাড় করে দিয়েছি।  কর্মশালার উদ্বোধন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণার উদ্যোগের সমালোচনা করে বলেন, আমাদের ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১-এর দেখাদেখি অন্যরাও (বিএনপি) না কি ভিশন ঘোষণা করবে। এটা লোক দেখানো। জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি। তাদের লক্ষ্য হাওয়া ভবনের মতো ‘খাওয়া ভবন’-এর আরেকটি ভিশন।  ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি করে সক্রিয় হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশে নীরব বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। তাকে ঘিরে আমাদের হাওয়া ভবন, খাওয়া ভবন কিংবা খোয়াব ভবন নেই। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। বিএনপি সজীব ওয়াজেদ জয়কে ভয় পায়। প্রথম দিনের কর্মশালায় আওয়ামী লীগের ৬০ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার দুই দিনের কর্মশালায় আরও ১০০ জন সংসদ সদস্যের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর