মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

মামলার তদন্ত যাচ্ছে ডিবিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মামলার তদন্ত যাচ্ছে ডিবিতে

রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ডিবি পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম জানান, গোয়েন্দারা ছায়াতদন্ত করে ধর্ষকদের অবস্থান শনাক্ত করেছেন। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। কিন্তু মামলার তিন দিন পার হলেও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আসামিদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি বনানী থানা পুলিশ। একই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ঘটনাটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং এর গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিসি শেখ নাজমুল আলম বলেন, ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনার ছায়াতদন্ত করে ডিবি আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করেছে। আসামিদের সম্পর্কে আরও বেশ কিছু তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে। তবে আসামিরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের বিচার হবেই। আর তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরপরই বিকালে দেশের ইমিগ্রেশনে ধর্ষণ মামলার আসামিদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যেহেতু ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর তাই এর তদন্ত ডিবিতে হওয়া উচিত এবং এর তদন্ত ডিবিতেই চলে আসবে। ধর্ষণের শিকার ওই দুই ছাত্রীর স্বজনদের অভিযোগ, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না।

তবে পুলিশের দাবি, আসামিরা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের গ্রেফতার করা হবে। ঘটনার আট দিন পর শনিবার মামলা নেয় বনানী থানা। ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীর একজন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেন। ওই মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফায়েত আহমেদ, তার বন্ধু নাঈম আশরাফ, সাদনান সাকিফ, সাফায়েতের গাড়িচালক বিলাল হোসেন ও দেহরক্ষীকে (অজ্ঞাত) আসামি করা হয়। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওপরমহলে মোটা অঙ্কের টাকা খরচের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষকদের বাঁচাতে বনানী থানার ওসিসহ পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা আসামিদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে ২৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রী। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বি এম ফরমান আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা ধরেননি। অভিযোগকারী দুই ছাত্রী সাংবাদিকদের জানান, ২৮ মার্চ বনানীর ব্লক-কে, রোড-২৭, হাউস-৪৯-এর ‘দি রেইনট্রি ঢাকা’ হোটেলের একটি কক্ষে সারা রাত তাদের আটকে রেখে ধর্ষণ করেন সাফায়েত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালান তারা। নির্যাতন শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার সময় তাদের হুমকি দেওয়া হয়, এ ঘটনা কাউকে বললে তাদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে। লাশ গুম করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর