সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

লন্ডনে ব্যারিস্টার রাজ্জাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর একের পর এক শীর্ষ নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর হলেও প্রবাসে নীরব জীবন কাটাচ্ছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক! ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে দেশে নেই ব্যারিস্টার রাজ্জাক। আছেন লন্ডনে। দেশ ছাড়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়। সব কটি মামলার প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতেই পর্যায়ক্রমে ফাঁসির রায় কার্যকর হয় মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাশেম আলী, আলী আহসান মুজাহিদ ও মতিউর রহমান নিজামীর। এ ছাড়াও জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সব কটি মামলার প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক কবে দেশে ফিরবেন বা আদৌ ফিরবেন কিনা, তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। তাই আবদুর রাজ্জাককে নিয়ে এখন দলের ভিতরই সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রশ্ন। তার অনুপস্থিতিতে মামলাগুলো পরিচালনা করছেন তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল আইনজীবী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, দলের শীর্ষ নেতাদের দুর্দিনে দীর্ঘদিন রাজ্জাক সাহেবের অনুপস্থিতি রহস্যের জন্ম দিয়েছে। কাদের মোল্লার ফাঁসির পর তিনি যে সেই বিদেশ গেলেন আর কোনো খবর নেই। এরই মধ্যে দলের আমির, সেক্রেটারিসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। ক্ষোভের সঙ্গে এই নেতা বলেন, দলের দুঃসময়েই যদি তাকে পাশে পাওয়া না গেল, তাহলে সুদিনে তার কী দরকার! ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল বসিয়ে বিচার শুরু করলে জামায়াতের এ নেতা ছিলেন আটক নেতাদের ও দলের মুখপাত্র। প্রতিদিনই তিনি দল ও আটক নেতাদের হয়ে মিডিয়ার সামনে নানাভাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতেন, ক্লান্তিহীনভাবে তার যুক্তিতর্ক আদালত বা মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপনা করতেন। নিয়মিত ব্রিফিং ও টকশো করার কারণে দেশে-বিদেশে তিনি ছিলেন অতিপরিচিত মুখ। জামায়াতের তিনিই একমাত্র নেতা, যিনি নিয়মিত টকশো করতেন। ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওমরাহ পালনের কথা বলে ঢাকা ছাড়েন জামায়াত নেতা রাজ্জাক। সৌদি আরব না গিয়ে প্রথমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখান থেকে লন্ডন হয়ে সৌদি আরব যান। পরে আবার লন্ডন ফিরে যান। প্রায় চার বছর ধরে প্রবাস জীবনে নিশ্চুপ রয়েছেন। জনশ্রুতি আছে, সিলেট-১ (সদর) আসন অথবা গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার নিয়ে সিলেট-৬ আসনে তিনি নির্বাচন করতে পারেন। তার নীরবতায় নির্বাচনী এলাকাতেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।

সর্বশেষ খবর