সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

শুল্ক গোয়েন্দারা রেইনট্রি হোটেলে, মদ উদ্ধার

হচ্ছে তিন মামলা আপন জুয়েলার্সের ৫ বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান, ১টি বন্ধ

সাখাওয়াত কাওসার

শুল্ক গোয়েন্দারা রেইনট্রি হোটেলে, মদ উদ্ধার

আপন জুয়েলার্সে গতকাল দিনভর অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর বনানীর অভিজাত হোটেল ‘দ্য রেইন ট্রি’তে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেছে সাফাত আহমেদ। রেইন ট্রি চালু হওয়ার আগে থেকেই সাফাত ওই হোটেলটি অবৈধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে আসছিল। তার সব অপকর্মের কথাই জানতেন হোটেল মালিক তার বন্ধু মাহির হারুন। তবে সাফাতের দাবি, ঘটনার দিনের ভিডিও ক্লিপসটি রয়েছে তার গাড়িচালক বিল্লালের কাছে। বিল্লালকে দিয়েই সে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করিয়েছিল। অন্যদিকে, ‘ডার্টি মানি’র সন্ধানে আপন জুয়েলার্স ও দ্য রেইন ট্রি হোটেলে অভিযান চালিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। অভিযানে আপন জুয়েলার্সের একটি শো-রুম সিলগালা করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া রেইনট্রি হোটেল থেকে অবৈধ মদ উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ মামলার চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত সহায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ডিবির যুগ্মকমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এমন অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে। সাফাতের গাড়িচালক, বডিগার্ড এবং নাঈম আশরাফকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য একাধিক টিম কাজ করছে। খুব শিগগিরই হয়তো তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা অনেক তথ্যই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। মাঝেমধ্যেই তারা অসুস্থতার ভান করছেন। তবে চিকিৎসক ডেকে এনে অসুস্থতার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বাদীর তথ্য এবং জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমাদের ধারণা সাফাত, সাকিফ গং ভিডিও চিত্রটি দেখিয়ে ওই ভুক্তভোগীকে দিনের পর দিন ভোগ করতে চেয়েছিলেন। ভিডিও চিত্র ধারণের জন্য সাফাতকে পরামর্শ দিয়েছিল নাঈম আশরাফ এবং সাদমান সাকিফ। রেইন ট্রি হোটেলের কর্মকাণ্ডের পর থেকেই সাফাত গং বিভিন্ন সময় ধর্ষিতাদের ফোন করে তাদের কাছে যেতে বলত। এক পর্যায়ে ধর্ষকদের নম্বর ভুক্তভোগীরা ব্লক করে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা টেক্সট মেসেজ পাঠাত। ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্র বলছে, দুই ছাত্রী ধর্ষণের ভিডিওর বিষয়টি জানার পর তা মুছে ফেলার জন্য সৌরভ ও পাপ্পু নামে তাদের দুই বন্ধুকে সাফাত, সাকিফ ও নাঈমের কাছে পাঠিয়েছিল। সাফাত গং তাদের সেই ভিডিওটি সৌরভ ও পাপ্পুকে দেখিয়েছিল বলে তারা ধর্ষিতাদের নিশ্চিত করে। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সাফাত তাদের বলছিল, কিছুদিন পর সেক্স ভিডিওটি ডিলিট করে দিবে। এদিকে গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আপন জুয়েলার্সের গুলশান, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ারের ৫টি শো-রুমে এবং বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় গুলশানে তাদের একটি শোরুম সিলগালা করে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর