মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সরকার আবারও যেনতেন নির্বাচন করতে চায়

শফিউল আলম দোলন

সরকার আবারও যেনতেন নির্বাচন করতে চায়

চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নিরপেক্ষ ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে বিএনপি অবশ্যই জনগণের রায় নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসবে। কারণ সারা দেশে জনগণ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এটা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার। এ কথা বুঝতে পেরেই আওয়ামী লীগ এখন আর সেই পথে হাঁটছে না। তবে আগামী নির্বাচনে আর ভোট নিয়ে প্রতারণার কোনো সুযোগ থাকবে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আলাপকালে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন কোনো দিনই সুষ্ঠু হয়নি, আগামীতেও হবে না। সরকার নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে নিজেদের মতো আবারও ‘যেনতেন’ একটি নির্বাচন করতে চায়। এজন্য তারা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দিয়ে নানা কায়দায় নিত্যনতুন ফন্দি আঁটছে। এরশাদ সাহেব নিজে মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। আর তার স্ত্রী হলেন ‘সরকারের পালিত’ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। এখন আবার শোনা যাচ্ছে এরশাদের জাতীয় পার্টি নাকি আর আওয়ামী লীগের ১৪-দলীয় জোটে থাকবে না। এজন্য তিনি এখন পাঁচ ডজন দল নিয়ে নতুন জোটের ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ নিজেরটা ছাড়া আর একটা দলের নামও বলতে পারছেন না। তার কয়েক দিন আগে জনসমক্ষে পরিষ্কার ভাষায় আগামীতেও ‘আওয়ামী লীগকে নিয়ে মিলেমিশে দেশ চালানো’র ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা-ই দেখার জন্য অপেক্ষা করছে দেশের মানুষ। কারণ সব ইচ্ছা ও পরিকল্পনা নাকি সব সময় পূরণ হয় না। সাবেক এই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী সরকারের প্রতি নির্বাচনে সব দলের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে শুধু বিএনপি কেন, কোনো রাজনৈতিক দলই সে নির্বাচনে অংশ নেবে না। আর আওয়ামী লীগকেও এ দেশের জনগণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না। সব দলের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। প্রবীণ এই রাজনীতিক আরও বলেন, আসলে সরকারও খুব স্বস্তিতে নেই। বিএনপি-ভীতিতে ভুগছে। সরকারের কথা ও কর্মকাণ্ডে সারাক্ষণই এখন বিএনপি-ভীতি। জাতীয় সংসদে বিএনপির কোনো প্রতিনিধি না থাকার পরও বেশির ভাগ সময় বিএনপি আর বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়েই আলোচনা হয়। দেশে কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম না থাকার পরও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে বর্তমান সরকার। দেশে এখন কোনো অস্থিরতা নেই। অথচ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় না। অন্যদিকে উন্নয়নের নামে চারদিকে শুধু চলছে লুটপাট। সরকারের যে যেভাবে পারছেন কামিয়ে নিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে উপার্জিত সব টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে হবে। অতএব বুঝেশুনে কাজ করুন।’ আলোচনাকালে দেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের লক্ষ্যে রাজপথের আন্দোলন ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য সংলাপের মধ্য দিয়ে নির্দলীয় সহায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর