শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

খাট ভাঙা, এখন ফ্লোরে ঘুমাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাট ভাঙা, এখন ফ্লোরে ঘুমাই

বাড়ি থেকে উচ্ছেদের সময় নিজের বাসার অনেক জিনিসপত্র হারিয়ে গেছে এবং বেশ কিছু আসবাবপত্র ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, তারা অনেক কিছু ভেঙে ফেলেছে। খাটও ভেঙে ফেলেছে। এখন আমি ফ্লোরে ঘুমাই। খাট ঠিক করা হলে তারপর খাটে ঘুমাব। তিনি বলেন, স্থানান্তরের সময় আমার সারা জীবনের অনেক সংগ্রহ হারিয়ে গেছে। এর মধ্যে এক হাজার বছরের পুরনো ইজিপশিয়ান মাটির বাটি হারানো গেছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বাড়ি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা মওদুদ বলেন, ‘আমি শিওর, তারা রায় না পড়ে কথা বলছেন। রায়ে কোথাও বলা নেই আমাকে এ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। বের করে দিতে হবে। তবু জোর করে বেআইনিভাবে চর দখলের মতো আমার বাড়িটা দখল করেছে। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’ মওদুদের অভিযোগ, বিএনপির রাজনীতি করার কারণেই তাকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, ওই বাড়িতে আমার এবং আমার মৃত দুই ছেলের অনেক স্মৃতি ছিল। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন লিখিত বক্তব্যে মওদুদকে উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, গুলশানের যে বাড়ি থেকে ব্যারিস্টার মওদুদকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, তা সরকার বা রাজউকের নয়। বাড়ির মূল মালিক করিম ফ্রানজ সুলায়মান। তা ছাড়া আদালতের আদেশ বা কোনো নোটিস ছাড়া বাড়ির দখলদারকে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। জয়নুল আবেদীন বলেন, বাড়ির মালিক ইনজে মারিয়া প্লাজ মারা যাওয়ার পর তার একমাত্র পুত্র সন্তান করিম ফ্রানজ সুলায়মানই এই বাড়ির মূল মালিক। ইটস এ ম্যাটার বিটুইন টু প্রাইভেট পার্টিস। সরকার বা রাজউকের এ ব্যাপারে কোনো স্বার্থ থাকতে পারে না। উচ্ছেদের সময় ওই বাড়ির মালামালের কোনো তালিকা করা না হওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ মালামালের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই উচ্ছেদ করার জন্য আদালতের কোনো নির্দেশ তাদের ছিল না। তারপরও বিনা নোটিসে এবং বিনা অনুমতিতে জোর করে বাড়িতে প্রবেশ এবং মওদুদকে উচ্ছেদ করে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন  খোকন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাড়িটি কে দখল করেছে তা মওদুদ আহমদ জানেন না। বাড়িটি পুলিশ দখল করেছে? র‌্যাব দখল করেছে? রাজউক দখল করেছে? সেদিন যার অধীনে উচ্ছেদ অভিযান হলো, তার নাম খলিলুর রহমান। তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলাম, তিনি বাইরে আসবেন না,  চেহারা দেখাবেন না। ফোনে কথা বললেন, তিনি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিলেন। এটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বিএনপির রাজনীতি না করলে এ বাড়ি থেকে মওদুদ আহমদকে উচ্ছেদ হতে হতো না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। গুলশান-২-এর ১৫৯ নম্বরের বাড়িটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন মওদুদ আহমদ। বাড়ির বিষয়ে আইনি লড়াইয়ে তিনি হেরে যান। পরে সম্প্রতি বাড়িটির দখল বুঝে নেয় রাজউক।

সর্বশেষ খবর