সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

নতুন চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান

ব্যাটিং ও বোলিং বিপর্যয়ে সর্বনাশ ভারতের

মেজবাহ্-উল-হক, লন্ডন থেকে

জাস্প্রিট বুমরার ক্যাচ সরফরাজ আহমেদ তালুবন্দী করার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় উৎসব। মাঠে ভিক্টরি ল্যাপ দিতে থাকেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। তাদের ছুঁতে কড়া নিরাপত্তাকে তোয়াক্কা না করে মাঠে প্রবেশ করেন পাকিস্তানের সমর্থকরা। পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন বলে কথা! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১৮০ রানে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতল পাকিস্তান। টানা দ্বিতীয়বারের শিরোপার স্বপ্ন দেখেছিল ভারত। কিন্তু ব্যাট ও বলে চরম বিপর্যয়ে কোহলিদের রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো। প্রিয় দলের এমন সর্বনাশা দৃশ্য দেখে গ্যালারিতে অনেক ভারতীয় সমর্থকরা চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। ‘উইকেট যেন পেসারদের ফাঁসির মঞ্চ, কোনো স্কোরই নিরাপদ নয়!’ গতকাল ওভাল স্টেডিয়ামের ডাইনিংয়ে খেতে খেতে বলছিলেন, ক্লাইভ লয়েড! দুবাই ভিত্তিক ‘টক রেডিও’র ধারাভাষ্যকার হিসেবে ওভালে কাজ করছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি। কিন্তু ক্লাইভ লয়েডের বাণীকে ভুল প্রমাণ করে কাল ওভালে বীরত্ব দেখালেন পাকিস্তানি পেসাররা। মোহাম্মদ আমির মাত্র ১৬ রানে তিন উইকেট নিয়ে ভেঙে দিয়েছেন ভারতের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড। আরেক পেসার হাসান আলী ১৯ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট। জুনায়েদ খান ২০ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। পেসারদের দাপুটে বোলিংয়েই কাল ওভাল জয় করল পাকিস্তান। তবে জয়ের মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরাই। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ৪ উইকেট হারিয়ে করেছে ৩৩৮ রান। ভারতীয় বোলারদের রীতিমতো তুলাধোনা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচেই সেঞ্চুরি আদায় করে নিয়েছেন পাকিস্তানি ওপেনার ফখর জামান। ১০৬ বলে খেলেছেন ১১৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। আত্মবিশ্বাসী এক ইনিংস। তিন ছক্কার সঙ্গে ১২টি বাউন্ডারি। জামানের ব্যাটিং দেখে মনেই হচ্ছিল না মাত্র কদিন আগে এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই তার ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। কী অসাধারণ স্কিল। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন আরেক ওপেনার আজহার আলীও। তবে ফখরের তুলনায় তিনি কিছুটা ধীর গতিতে রান করেছেন। ৭১ বলে করেছেন ৫৯ রান। সাইক্লোন ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ হাফিজ। মাত্র ৩৭ বলে করেছেন ৫৭ রান। ভারতের টার্গেট ৩৩৯ রান। কিন্তু রানের পাহাড় টপকাতে যেভাবে শুরুটা করা দরকার ছিল তা পারেনি ভারত। মাত্র ৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে মহাবিপর্যয়ে পড়ে যায়। তারপর ৩৩ রানে তিন উইকেট। ৫৪ রানে পর পর দুই উইকেটের পতন। ৭২ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ভারতের হার যেন নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে প্রায় ডুবন্ত আশার জাহাজকেও পাড়ে ভেড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন পাণ্ডে। পাক বোলার শাদাব খানের এক ওভারে তিন ছক্কাসহ ২৩ রান নেন। ছয় ছয়টি ছক্কায় মাত্র ৪৩ বলে করেন ৭৬ রান।  কিন্তু দিনটি তো পাণ্ডিয়ার ছিল না। তাই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেও ভুল বোঝাবুঝির কারণে পড়ে গেলেন রান আউটের ফাঁদে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন সেখানেই শেষ!

সর্বশেষ খবর