শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী মাঠে দুই দল

তৃণমূলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা । পোস্টার-ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে যাচ্ছে শহর-বন্দর-গ্রাম । তৃণমূল চষে বেড়াচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা । আধিপত্য বিস্তারে চলছে শোডাউন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত

শফিউল আলম দোলন ও রফিকুল ইসলাম রনি

নির্বাচনী মাঠে দুই দল

রমজানে ইফতার পার্টি ও ঈদের ছুটিতে যে জোর রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে তা ঈদের পরও থেমে নেই। সারা দেশে নতুন আঙ্গিকে মাঠে নামছে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও  বিএনপি। নিজ নিজ এলাকায় ‘যারপরনাই’ সরব হচ্ছেন নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তৃণমূলে বাড়ছে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা। দশম সংসদের মেয়াদ অনুসারে জাতীয় নির্বাচনে দেড় বছর আগেই পোস্টার, ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে যাচ্ছে এলাকা। নিজের এলাকায় অনেকে ‘উঠোন বৈঠক’ পর্যন্তও শুরু করে দিয়েছেন। যাওয়া শুরু করেছেন পাড়া-মহল্লায়। সবার লক্ষ্য একটাই— একাদশ জাতীয় নির্বাচন। সে নির্বাচনে নিজ দলের মনোনয়ন ও জয়লাভ দুটোই করতে হবে যে কোনো মূল্যে। সে জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছেন। তাছাড়া বর্তমানে সারা দেশের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একাধিক জরিপের কাজ চলছে। এ জরিপ চলাকালে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য শোডাউনের পরিমাণও বাড়াচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। একই সঙ্গে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ সরকারের কৃত দৃশ্যমান বড় বড় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরারও ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ফলে সঙ্গত কারণেই তাদের দেশের প্রতিটি এলাকায় যেতে হচ্ছে। তবে আপাতত নিজ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রতিপক্ষ নেতারাই এখন একে-অপরের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। ফলে এলাকার আধিপত্য আর নেতৃত্বের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় অনেকে দ্বন্দ্ব-সংঘাতেও জড়িয়ে পড়ছেন। নিজের দলের নেতাদের নামে একে-অপরের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা-হয়রানির অভিযোগও উঠছে হরদম। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভিতরে এ অভিযোগ উঠছে সবচেয়ে বেশি। গত দুই দিনে সিরাজগঞ্জ, নাটোরের রামশা, কাজিপুরের নলডাঙ্গা, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলা, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরসহ দেশের বেশকিছু স্থানে এলাকার আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে  আওয়ামী লীগের এক গ্রুপের সঙ্গে আরেক গ্রুপের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের মধ্যেও চলছে একই প্রতিযোগিতা। রাজশাহী ও চট্টগ্রামসহ অনেক এলাকায় নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আর দলীয় আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে মারামারি ও সংঘর্ষেও লিপ্ত হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ তুলছেন— যারাই এলাকায় একটু নির্বাচনী তৎপরতা চালাতে যাচ্ছেন, তাদের ওপরই ক্ষমতাসীনদের হামলা-নির্যাতনের খড়গ নেমে আসছে। একেকজনের নামে গড়ে অর্ধশত করে পুরনো মামলা থাকার পরও নতুন করে আরও মামলা দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের নেতাদের নামে নতুন করে মামলা দায়েরের অভিযোগ করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতার নামে গত এক সপ্তাহের ভিতরে বিভিন্ন অভিযোগে নতুন করে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়েরের অভিযোগ করেছে দলটি।  এ প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, হামলা, মামলা আর উচ্ছেদ করে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না। আমাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, মির্জা ফখরুলের ওপর হামলা আর বেগম খালেদা জিয়ার নামে মামলা দিয়ে বিএনপিকে দুর্বল ও অস্তিত্বহীন করা যাবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এবং জয়লাভ করবে।

আওয়ামী লীগ : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রিয়তা যাচাই এবং দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে আসনভিত্তিক জরিপ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। ঈদের পর এখন আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছে দলটির নেতারা। জোরদার করা হবে সাংগঠনিক কার্যক্রম। পূর্ণাঙ্গ করা হচ্ছে অসম্পন্ন ৬টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি। জেলা থেকে ইউনিয়ন যেখানেই সমস্যা সেখানেই নিরসনের উদ্যোগ। সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে দলের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী রয়েছেন সাড়ে তিন হাজার প্রার্থী। এদের মধ্যে থেকে ৩ থেকে ৪ জনের একটা শর্টলিস্ট করা হবে। এ ছাড়াও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোটারদের অবস্থান, দলের প্রতি সমর্থনের হার, এমপি-মন্ত্রীদের কাজের প্রতি তৃণমূল কর্মীদের সন্তোষ, ক্ষোভ, বিক্ষোভ, বিরোধী দলের প্রতি সমর্থনের ভিত্তি ও প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার মাত্রা বিশ্লেষণ করে দলের হাইকমান্ডের কাছে তুলে ধরা হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা এমন তথ্য জানিয়েছেন। 

গতকাল বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়া গাজীপুর জেলা ও মহানগর, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর, নেত্রকোনা জেলার কমিটি গঠনের কাজ আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বলা হয়েছে। এ ছাড়াও জুলাই মাসে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের  সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলনও দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের কাজে সহায়তা করতে দলের সহ-সম্পাদক পদগুলো খুব কম সময়ের মধ্যে পূরণ করা হবে। এ সহ-সম্পাদকদের তালিকা হবে ১০০’র মধ্যে। দফতর ও প্রচারে পাঁচজন, তথ্য ও গবেষণায় চারজন এবং অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে তিনজন করে সহ-সম্পাদক মনোনীত করা হবে। এই সহ-সম্পাদকদের কাজে সহায়তা করতে সর্বোচ্চ ৩০ জন সাধারণ সদস্য নেওয়া হবে। এ ছাড়াও জেলা কর্মিসভা, বিভাগীয় প্রতিনিধি সভাসহ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফর জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকে তা নিরসনেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে জেলা নেতাদের ঢাকায় ডেকে এনে কথা বলে উভয় পক্ষকেই মিলিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ৯ জুলাই খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা ডাকা হয়েছে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কোমর বেঁধে মাঠে নামবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে দলীয় সূত্র জানায়। দলীয় সূত্রমতে, প্রতিটি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের একাধিক নিজস্ব দলীয় টিম নির্বাচনী এলাকায় জরিপের কাজ পরিচালনা করে। এ জন্য একটি দলীয় গবেষণা সেলও রয়েছে। কেবল নিজ দলের প্রার্থীদেরই নয়, প্রতিপক্ষ প্রার্থীর অবস্থানও জরিপে তুলে ধরা হয়। এ ছাড়াও প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় দলের সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থীর বিষয়টিও বিশ্লেষণ করা হয়। সূত্র জানায়, নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জনপ্রিয়তা, এলাকামুখী, জনবিচ্ছিন্নতা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এ জরিপ করা হচ্ছে। জরিপের প্রতিবেদন কেবল দলীয় হাইকমান্ডের কাছেই পেশ করা হয়। অতীতের যে কোনো ঈদের চেয়ে এবার গ্রামগঞ্জে বেশি ছিল নির্বাচনী আমেজ। ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চাইতেও ভুল করেননি নেতারা। এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধ নিরসনে উদ্যোগী হয়েছেন অনেকে। জনগণের সামনে সরকারের উন্নয়ন চিত্রও তুলে ধরেছেন তারা। আগামীতে ক্ষমতায় এলে কী কী করবেন সে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। ঈদ রাজনীতিতে ভোটের যে হাওয়া বইতে শুরু করেছে তা ধরে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেদিক বিবেচনায় রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল মুহম্মদ ফারুক খান (অব.) বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো কোন্দল নেই। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ জরিপ শুরু করেছে। মাঝে-মধ্যে রিপোর্ট আসা শুরু হয়েছে। সারা দেশের ৩০০ আসনের প্রতিটিতে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ জন করে প্রার্থী রয়েছেন। যার অধিকাংশই যোগ্য। এর মধ্য থেকেই একজনকে মনোনয়ন দিতে হবে। সে কারণে মনোমানিল্য থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর থেকেই আমরা মাঠে নেমেছি। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিয়মিত জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা, কর্মিসভা ও বিভাগীয় সম্মেলন করছেন। কোন্দলপূর্ণ জেলা নেতাদের ঢাকায় ডেকে সমস্যার নিরসন করা হচ্ছে। সে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে বিরোধী দলগুলোর ব্যাপক বাধা-প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দেশজুড়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের গৃহীত উন্নয়নগুলো আরও বেশি করে জনগণের সামনে তুলে ধরতে গত অক্টোবর থেকেই মাঠে ছিলাম। এখন আরও সক্রিয়ভাবে মাঠে নামব। দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী ৯ জুলাই খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও সারা দেশের জেলা-উপজেলাসহ ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধান করতে কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে যাবেন। সরকারের উন্নয়ন চিত্র প্রচার করে জনমত সৃষ্টিই হবে আমাদের কাজ।

বিএনপি :  ঈদের পর এবার নতুন আঙ্গিকে মাঠে নামছেন বিএনপি নেতারা। দুই-এক মাসের মধ্যে যে কোনো দিন কর্মসূচির ডাক দিতে পারেন দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। এ কর্মসূচিও হবে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে। রমজানের ঈদের পর যে কোনো সময় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ডাক দিতে পারেন বলে ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। তাছাড়া গ্রেফতার, হয়রানিসহ সরকারের দমননীতি তো রয়েছেই। ফলে তখন হয়তো এলাকায় নিজের জনমত তৈরি বা আধিপত্য বিস্তারের কাজে সময় দেওয়ার মতো তেমন সুযোগ নাও পাওয়া যেতে পারে। এই চিন্তা মাথায় রেখেই এখন প্রায় উঠেপড়ে লেগেছেন বিএনপির অধিকাংশ মনোনয়নপ্রত্যাশী। ঈদ চলে গেলেও পুনর্মিলনী কিংবা ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে তারা নিজ নিজ এলাকায় যাওয়া শুরু করেছেন। নতুন করে পোস্টার, ডিজিটাল ব্যানার স্থাপন করছেন স্ব স্ব এলাকায়। পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময়ের পাশাপাশি হাত মেলাচ্ছেন। সমস্যার কথা শুনছেন এলাকায়। হতদরিদ্রদের মধ্যে কাপড় ও খাবার বিতরণ করছেন নিজের অর্থ খরচ করে। টুকটাক অনুদান দেওয়া শুরু করেছেন পাড়া-মহল্লার স্থানীয় যুবক্লাবগুলোতে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার বিকালে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করে আসেন। সেখানে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এবং জয়লাভ করবে। দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ঈদের দুই দিন পর নিজ এলাকায় গিয়ে বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক তা সরকার চায় না। কারণ বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ পরাজিত হবে এটা সরকারি দল অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালীর চাটখিলে নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে জনগণের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় শেষে স্থানীয় কুলশ্রী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপির এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন ব্যারিস্টার খোকন। সেখানে তিনি বলেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য আওয়ামী সরকার এখন থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বিজয়ী হবে ইনশা আল্লাহ। এলাকায় তার নিজের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এবারের ঈদের আগে ও পরে দলের ছোট-বড় ও মাঝারি পর্যায়ের কমপক্ষে সহস াদের ঢুকে যেতে হবে জেলে। তবুও যাচ্ছেন এলাকায়। শুরু করেছেন নির্বাচনী তৎপরতা। এদেরই একজন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি) সোহেল। তিনি জানান, অর্ধশতাধিক মামলা মাথায় নিয়ে মাসখানেক আগে সর্বশেষ জামিনে বেরিয়েছেন তিনি। যে কোনো সময় আবারও জেলে যেতে হতে পারে তার। এ জন্য যতটুকু সময় পাচ্ছেন এলাকায় গণসংযোগ ও দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যয় করতে চান। একই কথা বলেছেন, জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম। তিনিও কিছু দিন আগে (রাস্তায় রিকশা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে) নাশকতা মামলায় জেল খেটে বেরিয়েছেন। এখন এলাকায় নির্বাচনী তৎপরতাসহ সাংগঠনিক কাজে মনোযোগ দিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর