শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আবাসিক ভবন হবে সেই হলি আর্টিজানে

জিন্নাতুন নূর

আবাসিক ভবন হবে সেই হলি আর্টিজানে

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার এক বছর হতে চলেছে। হামলার পর কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত রেস্টুরেন্টটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে গুলশান এভিনিউর র্যাংগস আর্চাড ভবনে এটি সরিয়ে নেওয়া হয়। পুরনো স্থানে আর কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম  হবে না বলে জানিয়েছেন হলি আর্টিজানের মালিকরা। তারা জানান, জায়গাটি শুধু আবাসিক কাজে ব্যবহার হবে। বর্তমানে দ্বিতল ভবনটিতে সাদা রং লাগানো হচ্ছে। ভিতরে চলছে চুনকাম। রেস্টুরেন্টের অন্যতম মালিক সাদাত মেহেদি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুলিশ ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলেছে। আমরা এখন সংস্কার করে আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করব।’ সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ লনে দোলনচাঁপা গাছের শুভ্র ফুলগুলোর হাসি যেন অতীতের ভয়াবহ স্মৃতি চাপা দিতে চাইছে। তবে এখনো সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে হলুদ-কালো লোহার প্রতিবন্ধক বসানো। ভবনের প্রবেশ ফটকে ঝুলছে তালা। কমান্ডো অপারেশনে দেয়াল ভেঙে যাওয়ায় আপাতত নীল রঙের টিন লাগানো হয়েছে। গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর রোডে প্রায় ২ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গায় ছিল হলি আর্টিজান। সবুজ ঘাসের লন, লেকসাইড ভিউ ও সুস্বাদু খাবারের জন্য বিদেশিদের কাছে এটি ছিল অন্যতম প্রিয় একটি রেস্টুরেন্ট। কিন্তু গত বছরের ১ জুলাই সন্ত্রাসীদের হামলা ও কমান্ডো অভিযানে হলি আর্টিজানের ভিতরে বেশির ভাগ স্থাপনা, দেয়াল ভেঙে যায়। চার মাস পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৩ নভেম্বর রেস্টুরেন্টটি মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, ভিতরে সংস্কারকাজ চলছে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন। জানালার ভেঙে যাওয়া কাচগুলো লাগানো হচ্ছে। তবে সংস্কারকাজে কোনো তাড়াহুড়ো নেই। এক শ্রমিক জানান, অনুমতি ছাড়া এখানে বর্তমানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হলি আর্টিজানের মালিকদের একজন আলী আর্সলান বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক হামলায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এজন্য সংস্কার প্রয়োজন ছিল। আপাতত এখানে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। সংস্কার শেষেই আমরা ঠিক করব, কে বা কারা থাকবেন।’ তিনি আরও জানান, আসছে ১ জুলাই সীমিত পরিসরে ও পরিচিতদের মধ্যে নিহতদের স্মরণে মিলাদ পড়ানো হবে। তবে সেটি কোথায় হবে তা এখনো ঠিক করা হয়নি। আলী আর্সলান বলেন, ‘যারা সেদিন প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি স্থাপনা তৈরিরও চিন্তাভাবনা করছি।’ হলি আর্টিজানের যাত্রা হয় ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। বিদেশিদের মধ্যে রেস্টুরেন্টটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ২০১৬ সালের ১ জুলাই জঙ্গিরা সেখানে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। নিহত হন ২ পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন। পরে সেনা কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় ৬ জঙ্গি।

সর্বশেষ খবর