শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফারাজ আমার গর্ব

সাক্ষাৎকারে বললেন মা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফারাজ আমার গর্ব

ফারাজ আইয়াজ হোসেনের নাম বলতেই মা সিমিন হোসেনের চোখের কোণ থেকে গড়িয়ে পড়ে এক ফোঁটা অশ্রু। প্রিয় সন্তান হারানোর বেদনায় ভারি হয়ে আসে গলা।

 ফারাজের কথা বলতে গিয়ে বলেন, গত বছর ১ জুলাই ইফতারের পর গল্প করতে গিয়ে ও আমাকে বলেছিল ‘মা দেখো তুমি আমাকে নিয়ে একদিন গর্ব করবে।’ জানি না সে কি মনে করে আমাকে এ কথা বলেছিল। আজ সেটাই হয়েছে। সবাই আমাকে চেনে ফারাজের মা হিসেবে। কয়জন মা তার ছেলের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারেন? ফারাজ বন্ধুত্ব, মানবিকতা এবং সাহসীকতার যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছে তা সত্যিই বিরল। ফারাজ আমার গর্ব।    

গতকাল রাজধানীর গুলশান টাওয়ারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মা সিমিন হোসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন।

ফারাজের বন্ধুত্ব এবং সাহসীকতার কথা বলতে গিয়ে সিমিন হোসেন বলেন, আমার ছেলে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জীবন দিয়ে সে জঙ্গিবাদকে ‘না’ বলে গেছে। দেশের সব মানুষেরই এই জঙ্গিবাদ, উন্মত্ততাকে ‘না’ বলা উচিত। বিশ্বের কোনো ধর্মই সন্ত্রাসবাদকে স্বীকৃতি দেয় না। জঙ্গিবাদ নিরসনে সরকার যে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে তাতে লাখো মানুষের জীবন রক্ষা হয়েছে। আমার ছেলে চলে গেছে কিন্তু আর যেন কেউ প্রিয়জনহারা না হয়। ছেলেমেয়েদের জাতীয়তাবোধ এবং নিজস্ব মূল্যবোধ থেকে ভাবতে হবে। সমস্যা থাকলে বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু উন্মত্ততায় জড়িয়ে পড়া যাবে না।

ছোট ভায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে যারেফ আয়াত হোসেন বলেন, জীবন মানে অনেকগুলো বছর বেঁচে থাকা নয়, জীবন মানে মানুষের জন্য কিছু করে যাওয়া। মাত্র ২০ বছরের ছোট্ট জীবনে ফারাজ সেটা করে গেছে। কতটা মানবিক, সাহসী এবং বন্ধুবৎসল মানুষ হলে বন্ধুর জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করা যায়। ফারাজকে হারিয়ে আমরা অবর্ণনীয় কষ্টে আছি কিন্তু তার এই চলে যাওয়া বীরত্বপূর্ণ। আমি আমার ভাইয়ের মতো হতে চাই। সে সাহসী এবং মানবিক মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে সবার মাঝে বেঁচে থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর