শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশিদের ভয় নেই, ছয় দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেয়াল

প্রতিদিন ডেস্ক

ছয়টি মুসলিম দেশের নাগরিক ও শরণার্থীদের জন্য প্রবেশ দরজা শক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন থেকে ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের মার্কিন মুলুকে প্রবেশে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ভ্রমণবিষয়ক নিষেধাজ্ঞার কারণে শরণার্থীরাও আটকে যাবেন এ দেয়ালে। খবর সিএনএন ও বিবিসি অনলাইনের।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। প্রসঙ্গত, এ সপ্তাহের শুরুতে সুপ্রিম কোর্ট ছয়টি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আংশিক কার্যকর করার আদেশ দেয়। আদালতের আদেশে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে ঘনিষ্ঠ স্বজন আছে প্রমাণ করতে পারলেই এসব দেশের নাগরিক ও শরণার্থীরা ভিসা নিতে পারবেন। প্রমাণ দিতে না পারলে পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য নাগরিকরা ও ১২০ দিনের জন্য শরণার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না। পরিবারের এই ঘনিষ্ঠ সদস্য ও আত্মীয়ের তালিকায় রয়েছেন মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, হবু স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে, জামাই, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনি। দাদা-দাদি বা নানা-নানি, খালা-চাচি-মামি-ফুফু, চাচা-খালা-মামা-ফুফা, ভাতিজা এবং ভাগ্নেকে ঘনিষ্ঠ স্বজন হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।

অক্টোবরে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার অন্যান্য বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। তবে ছয়  দেশের যেসব নাগরিক এর মধ্যে ভিসা পেয়েছেন, তাদের  ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া মার্কিন নাগরিক, গ্রিন কার্ডধারী বৈধ বসবাসকারী, দ্বৈত নাগরিক, এরই মধ্যে এসব দেশের যেসব শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পেয়েছেন তাদেও ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।

বাংলাদেশিদের ভয় নেই : নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাংলাদেশিদের ভয় নেই বলে জানিয়েছেন অভিবাসন আইনজীবীরা। এদিকে এই প্রতিবাদে অভিবাসন আইনজীবীরা বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশিরাও উদ্বেগের মধ্যে আছেন। তবে তাদের ভয়ের কারণ নেই বলে জানিয়েছেন অভিবাসন আইনজীবীরা।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পরিচিত অভিবাসন আইনজীবী ইউএস সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের আংশিক কার্যকর হওয়ায় বাংলাদেশিদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ  নেই। নির্বাহী আদেশে পরিষ্কারভাবে ছয়টি দেশের নাম উল্লেখ করা আছে। তিনি বলেন, ‘অভিবাসন আইনের কোনো লঙ্ঘন না করলে আমাদের প্রবাসীদের বিচলিত হওয়ার  কোনো কারণ নেই।’

মঈন চৌধুরী সতর্ক করেছেন, গুজব ছড়িয়ে, ভীতি ছড়িয়ে কোনো কোনো মহল বিভ্রান্ত করতে চাইছে। অভিবাসন-সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্নে অভিজ্ঞ আইনজীবী বা এ বিষয়ে যারা কাজ করছেন এমন সংগঠনের সঙ্গে  যোগাযোগ করার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের আংশিক কার্যকারিতা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওয়াইয়ে একটি মামলা করা হয়েছে। কার্যকারিতার ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের জন্য আইনজীবীরা আবেদন জানিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাটি আবারও জটিল আইনি প্রক্রিয়ায় পড়বে।

সর্বশেষ খবর