রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ক্ষমতায় আসতে লটারির টিকিট কিনতেই হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতায় আসতে লটারির টিকিট কিনতেই হবে

আজমালুল হোসেন কিউসি

ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। এটা সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই আছে। আর নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা ১৯৯১ সালের পর চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ১৯৯১ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে আমরা একটা টেম্পরারি মেজারমেন্ট বা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, যাতে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট নিয়ে এসেছিলাম। এর প্রয়োজন ছিল। না হলে যেটা শুনি, তাতে আবার হয়তোবা আমাদের দেশে মার্শাল ল’ চলে আসত।’ কিউসি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকারের আমলে যে দুটি নির্বাচন হয়েছে, আমি বলতে পারি না যে ওই দুটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। তারপর দেখলাম, বাংলাদেশে প্রত্যাখ্যানের রাজনীতি শুরু হয়ে গেল। দুই পক্ষ যারাই আসে, প্রতিটি দলই অন্য দল পলিসি বা চিন্তা যা-ই নিয়ে আসে তা প্রত্যাখ্যান করে। দেখা যাচ্ছে যে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেষ্টা করে না। একজন আরেকজনকে অনেক রকমের ডিভাইস ব্যবহার করে ছক আউট করার চেষ্টা করছে।’ কিউসি বলেন, ‘আমি আইনজীবী হিসেবে বুঝতে পারি না, কেন এটা হচ্ছে। আমি রাজনীতি বুঝি না, রাজনীতি করিও না। আমার কাছে মনে হয়, এখানে সবার জন্য অনেক কমন গ্রাউন্ড আছে। কারণ কেউ যদি কোনো সময় ক্ষমতায় আসতে চায়, তাহলে তাকে তো নির্বাচন করেই আসতে হবে। নির্বাচনের তো কোনো বিকল্প নেই। কমন গ্রাউন্ডের মধ্যে আমাদের এখানে গণতন্ত্রের প্রয়োজন আছে কি না। নিশ্চয়ই সবাই বলবে গণতন্ত্রের প্রয়োজন আছে। নির্বাচনের প্রয়োজন আছে কি না। অবশ্যই সবাই বলবে প্রয়োজন আছে। এখন শুধু প্রশ্নটা হলো, নির্বাচনটা কেমনভাবে সুষ্ঠু করা যায়, যেটা সবাই একসেপ্ট করবে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে ১৯৫০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কম হলেও ৫০টা মামলা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, যে কেমন করে নির্বাচনের প্রক্রিয়াটাকে সুষ্ঠু করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘কেমনভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। আমার কাছে মনে হয়, সেখানে তো আইনের কোনো কমতি নেই। সেই জন্য নির্বাচন করতেই হবে। রেজাল্ট যেন সুষ্ঠু হয় এর জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আর আমাদের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। সংবিধানে সেটা বলাই আছে। তারা অনেক ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।’ প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘আমাদের যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ, তাদের উচিত নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্বাচনের পূর্ণ দায়িত্বটা দিয়ে দেওয়া। আমি মনে করি, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার জন্য সবাইকে অংশ নিতে হবে। কারণ কথাটা হলো, যদি ক্ষমতায় আসতে চান, লটারি যদি জিততে চান, লটারির টিকিট একটা কিনতেই হবে। লটারির টিকিট না কিনলে পরে কোনো সময় লটারি জিততে পারবেন না।’

সর্বশেষ খবর