স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন রোডম্যাপ নামক যে পথনির্দেশনা ঘোষণা করেছে, তা একটি রুটিনওয়ার্ক। এখানে বড় ধরনের চমকপ্রদ (ব্রেক থ্রো) কিছু নেই। কারণ, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একাদশ নির্বাচন নিয়েও মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সে প্রশ্নগুলো সমাধানে কোনো ব্রেক থ্রো দেখা যাচ্ছে না। ব্রেক থ্রো ছাড়া আমি মনে করি, এখনো আগামী নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা পুরোপুরি বিদ্যমান।’
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনী রোডম্যাপকে ইতিবাচকভাবে নেবেন। এটা নিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে কথা বলার প্রয়োজন নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত করা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। একাধিক সিনিয়র মন্ত্রী এ নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনীর কোনো প্রয়োজন নেই। রেগুলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনাবাহিনীকে ডাকার প্রয়োজন নেই। যদি নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করে তাহলে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীকে রাখতে পারে। একাধিক মন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনীকে রেগুলার ফোর্স হিসেবে না রাখার বিষয়টি ২০০৮ সালেই ফয়সালা হয়ে গেছে। এ নিয়ে এখন আলোচনার আর কিছু নেই। বিএনপি অযথাই এটা নিয়ে টানাটানি করছে। এ ছাড়াও বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে মন্ত্রিসভার কোনো কোনো সদস্য এ বলে মন্তব্য করেছেন যে, খালেদা জিয়া বিচারের ভয়ে দেশে হয়তো আর নাও আসতে পারেন।
মানবদেহে অঙ্গ সংযোজন আইনের খসড়া অনুমোদন : ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন, ২০১৭’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। সংশোধিত আইনের বেশ কিছু বিষয় নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমোদিত রক্তসম্পর্কিতদের আওতা বাড়ানোর বিষয়টি। একই সঙ্গে সরকারি হাসপাতালের বিশেষায়িত ইউনিট ছাড়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সব ধরনের হাসপাতালকে সরকারের কাছে বাধ্যতামূলক অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি সংযোজন করা হয়েছে। এ আইনের আওতায় কেউ অপরাধ করলে কিংবা আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আশরাফ শামীম নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন সংশোধন হচ্ছে মূলত আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে। একই সঙ্গে এ আইন মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অবৈধ পাচারের যে সংযুক্তি ঘটেছিল তাও বন্ধ করবে। এটি নিয়ে ব্যবসা করার বিষয়টি প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখবে এ আইন।