শিরোনাম
শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীকে মনোনয়ন দিলে ভোট বয়কট : রানা দাশগুপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীকে মনোনয়ন দিলে ভোট বয়কট : রানা দাশগুপ্ত

কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত কাউকে মনোনয়ন দিলে ওই আসনে ভোট বর্জন করা হবে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত সংখ্যালঘু স্বার্থবিরোধী কোনো প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এমন কাউকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দল বা জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এখন নির্বাচনের কথা শুনলে ভয় পায়, আঁতকে ওঠে। নির্বাচন তাদের কাছে নির্যাতনের ভয়াবহ রূপ হিসেবে দেখা দেয়। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ মনীন্দ্র কুমার নাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারীও, পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে যেসব নির্বাচন হয়েছে ব্যতিক্রম বাদে সেসব নির্বাচনের পূর্বাপর আমরা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার হয়েছি। এ সহিংসতা চলাকালে এসবের প্রতিরোধে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সরকার কারও কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা দেখিনি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব সহিংসতার পেছনে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।’ নির্বাচনের আগেই ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ ১৭ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠন। তাদের উত্থাপিত দাবিসমূহ সরকার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং জাতির সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে ১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জমায়েত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ওই দিন সারা দেশে জেলা ও মহানগর সদরে একই দাবিতে জমায়েত শেষে স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। তাদের দফার মধ্যে রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে না যারা অতীতে বা বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বে থেকে সংখ্যালঘু স্বার্থবরোধী কোনো প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন। কোথাও এমন কাউকে প্রার্থী করলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী সেখানে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে বা ভোট বর্জন করবে। যে রাজনৈতিক দল বা জোট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের পাঁচ দফা দাবির পক্ষে নির্বাচনী অঙ্গীকার ঘোষণা করবে তাদের প্রতি এই মোর্চার পূর্ণ সমর্থন থাকবে। আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহকে দায়িত্ব নিতে হবে। নির্বাচনের পূর্বাপর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার; মন্দির, মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় সব উপাসনালয়কে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার না করা; নির্বাচনী সভায় ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান নিষিদ্ধের পাশাপাশি তা ভঙ্গের দায়ে সরাসরি প্রার্থিতা বাতিলসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচনের আগেই সরকারকে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য ভূমি কমিশন গঠন, বর্ণবৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বাস্তবায়নসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর