বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইসির সঙ্গে সংলাপ

সংসদ ভেঙে ভোটে সেনা তবে ইভিএম নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার পাশাপাশি ‘না’ ভোট চালুর পক্ষে মত দিয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে ইসিকে নির্বাচনকালীন তদারকি সরকারের ভূমিকা পালন, ভোটার সংখ্যা অনুপাতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ,

তফসিল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ ২৩ দফা সুপারিশ করেছে দলটি। এদিকে, সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে নির্দলীয় ব্যক্তির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে ২০-দলের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা। এ ছাড়া ভোটে সেনা মোতায়েনের পক্ষে ও ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে দলটি। গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বিকালে জাগপার সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। এ সময় দুই নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইভিএমের বিপক্ষে, না ভোটের পক্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি : সকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ২৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সুপারিশ ইসি আমলে নেবে প্রত্যাশা করি। তিনি জানান, সংসদ নির্বাচনে ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে ৫০% আসন এলাকাভিত্তিক প্রত্যক্ষ ভোট ও বাকি ৫০% আসনে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচন হতে পারে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন তদারকি সরকার গঠনে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে রাখা, ভোটার সংখ্যা অনুপাতে সংসদীয় আসন পুনর্নির্ধারণ, ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার, ইভিএম ব্যবহার না করা, অনলাইন মনোনয়নপত্র জমা চালু, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের তৎপরতা বন্ধ, সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ ২৩ দফা সুপারিশ করেছে দলটি।

সংসদ ভেঙে ভোটে সেনা, তবে ইভিএম নয় : বিকালে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপিকা রেহানা প্রধানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুত্ফুর রহমান বলেন, আমরা ইসির কাছে ১৪টি প্রস্তাব দিয়েছি। কমিশন এ বিষয়ে যতদূর সম্ভব উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

জাগপার প্রস্তাবগুলো হচ্ছে— নির্বাচকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের পর পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সাবেক বিচারপতি এবং দেশের বিশিষ্টজনদের সমন্বয়ে সৎ গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় ব্যক্তি দ্বারা সরকার গঠিত হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচকালীন সরকার প্রধান থাকলে দেশের ভাবমূর্তি ও নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতা বাতিল করে তিন মাসের অবকাশ কালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে। ভোটের ৩০ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, সবার জন্য সমান সুযোগ, এমপি-মন্ত্রীদের সুবিধা বাতিল, গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ প্রবেশাধিকার, ইভিএম পদ্ধতি বাতিলসহ ১৪ দফা সুপারিশ রয়েছে। এদিকে, নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে ঈদের পরে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে দলগুলোর সঙ্গে আবার সংলাপ শুরু করবে ইসি। এর আগে ৩১ জুলাই, ১৬ ও ১৭ আগস্ট সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।

সর্বশেষ খবর