বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রবাসীদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

বড় বড় বাড়ি-গাড়ি হলেই ভোটাররা ভোট দেবে না

প্রতিদিন ডেস্ক

দলীয় নেতা-কর্মীদের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি আমার এমপিদের বলেছি, আপনারা দেখেন, শেখেন। কীভাবে ভোটারের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করা যায়। ওই বড় বড় গাড়ি-বাড়ি হলেই ভোটাররা ভোট দেবে না।’ তিনি বলেন, ‘ভোটারের সমস্যা জানতে হবে। সেগুলোর সমাধান করতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের আপনজন ভাবতে হবে। আগামীতে নির্বাচন। এই ইলেকশনটা বিরাট চ্যালেঞ্জ, এটা মনে রাখতে হবে।’ গত মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি সভায় দেশের বিভিন্ন খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের নানা কর্মকাণ্ডের     সমালোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে  নেওয়ার কথা মিয়ানমারকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এবং মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে। সেখানে এমন পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে সেখান থেকে দলে দলে মানুষ এসেছে। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিতে হয়েছে।  কক্সবাজারে নিজের চোখে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সেখানে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কেবল নিজেদের কথা মনে হয়েছে। আমাদেরও একদিন এভাবে হানাদার পাকিস্তানিদের কারণে এ ঘর থেকে ও ঘরে আশ্রয় খুঁজে বেড়াতে হয়েছে। আমাদের ঘরবাড়ি সব জ্বালিয়ে ছারখার করেছে। মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমাদের দেশের মানুষও আশ্রয় নিয়েছিল। ভারতে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ছিল। আজকে যখন তারা (রোহিঙ্গা) বিপদে পড়েছে, অবশ্যই তাদের জায়গা দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, এত মানুষের খাবার দেবেন কীভাবে? আমি তাদের একটা কথাই বলেছি; ১৬ কোটি মানুষ আমাদের। এই ১৬ কোটি মানুষকে যদি খাবার দিতে পারি, তাহলে এই সাত-আট লাখ লোককে খাবার দিতে পারব না? বাংলাদেশের মানুষ অনেক উদার মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে তারা একবেলা খাবে। অন্যবেলার খাবার এই আশ্রিত মানুষকে তুলে দেবে, সেই মানসিকতা তাদের আছে। আমরা সেখানে লঙ্গরখানা খুলে দিয়েছি, চিকিৎসা, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই হবে।  শেখ হাসিনা বলেন, কোনো দেশে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটুক, তা বাংলাদেশ চায় না। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী কোনো দেশে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দেওয়া হবে না। রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। জাতিসংঘে যাদের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে, প্রত্যেকেই কিন্তু এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। তিনি বলেন, জাতিসংঘে ওআইসির এক বৈঠকে আমি প্রশ্ন রেখেছি, আজকে মুসলমানরা কেন রিফিউজি হয়ে ঘুরে বেড়ায়? আপনারা সবাই কেন এক হন না? কেন সবাই ঐক্যবদ্ধ হন না?

সর্বশেষ খবর