রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ঠেকাতে সীমান্তে মরিচ বোমা মারবে ভারত

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে মরিচ বোমা ও স্টান গ্রেনেড (এই দুটিই নন-লিথাল ওয়েপনস এবং এগুলো ব্যবহারে সাময়িকভাবে অন্ধত্ব এবং অচেতনতা আসে) ব্যবহার করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মূলত ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর অরক্ষিত এলাকাগুলোতেই ওই কৌশল নিয়েছে বিএসএফ। ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সম্প্রতি সীমান্ত জুড়েই কড়া নজরদারি শুরু করেছে বিএসএফ, এটা তারই অঙ্গ বলে জানা গেছে।  ভারত সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এই রোহিঙ্গারা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি বলেও অভিমত কেন্দ্রের। এরপরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএসএফকে আরও ‘রুড অ্যান্ড ক্রুড’ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি থেকে। বিষয়টি নিয়ে সব রাজ্য সরকারেই নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা যেন রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। এ ব্যাপারে বিএসএফের কর্মকর্তা নাম না জানানোর শর্তে দিল্লিতে জানান, ‘আমরা তাদের আটকও করতে চাই না আবার মারাত্মকভাবে আহত হোক সেটাও চাই না কিন্তু ভারতের মাটিতে কোনো রোহিঙ্গাকেই সহ্য করা হবে না।’ তিনি আরও জানান, ‘ভারতে শত শত রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমরা মরিচ বোমা ব্যবহার করছি...পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজনাময়।’ উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতার কারণে গত কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছে। তবে গত আগস্টের শেষে নতুন করে সহিংসতা তৈরি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গার কুঁড়েঘর করে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাটা বাংলাদেশের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। এমন এক পরিস্থিতিতে সীমান্ত পেরিয়ে রোহিঙ্গারা ভারতে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা দিল্লির। এই আশঙ্কা থেকেই দিল্লি থেকে বিএসএফের কাছে রোহিঙ্গাদের পুশ ব্যাক করার নির্দেশ এসে পৌঁছায় বলে খবর। এ ব্যাপারে বিএসএফের ডিআইজি আর পি এস জসওয়াল জানান, রোহিঙ্গাদের পুশ ব্যাক করতে বাহিনীকে চিলি বোমা ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে অনড় অবস্থান নিয়েছে মোদি সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন ‘রোহিঙ্গারা ভারতে শরণার্থী হিসেবে ভাবে না, কারণ তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তারা এদেশে আসেনি। কোনো রোহিঙ্গাই ভারতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জানায়নি।’

সর্বশেষ খবর